মঙ্গলবার | ৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবারের জাতিসংঘ সম্মেলন নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করা ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ একটি মঞ্চ

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন: বাংলাদেশের জন্য এবারের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার দেড় মাসের মাথায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবার জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে তার ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, গণঅভ্যুত্থান ও ক্ষমতার পালাবদলের পর আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য এই সম্মেলনকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষত মানবাধিকার ও গণতন্ত্র ইস্যুতে আগের সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের টানাপড়েনের পরিপ্রেক্ষিতে এবারের অধিবেশন নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।

নতুন সরকারের জন্য সুযোগ: বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এই অধিবেশনকে বাংলাদেশের জন্য ‘বিশ্বসভায় নতুন পদচারণা’ এবং ‘বিশাল সুযোগ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তিতে একটি উচ্চ পর্যায়ের রিসেপশনও আয়োজন করা হবে, যেখানে জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ূন কবির বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে সহযোগিতা চাইবে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল বৈশ্বিক মঞ্চে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় বিদেশি বিনিয়োগ এবং আর্থিক সহায়তা আদায়ের বিষয়টিও আলোচনার টেবিলে থাকবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।

মানবাধিকার ও গণতন্ত্র ইস্যু: গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এবারের অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা এসব ইস্যুতে পরিবর্তিত পরিস্থিতি তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানবাধিকার রক্ষা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হবে বলে মনে করেন সাবেক কূটনীতিক নাসিম ফেরদৌস।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও ভারতের সঙ্গে আলাপ: ড. ইউনূসের অধিবেশনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কোনো বৈঠক হচ্ছে না বলে জানা গেছে, তবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক হবে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন দূর করতে কার্যকর সম্পর্ক ধরে রাখার চেষ্টা করা হবে।

বাংলাদেশের জন্য এবারের অধিবেশন শুধু বিশ্বে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার সুযোগ নয়, বরং অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় বৈদেশিক সহায়তা ও বিনিয়োগ আনারও একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হিসেবে কাজ করবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- Payra Team