রবিবার | ৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ১৮ কার্তিক, ১৪৩১

পাহাড়ের বিশৃঙ্খলা নিয়ে হেফাজতে ইসলামের বিবৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও স্থিরতা ফেরাতে সম্মিলিত রাজনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, পার্বত্য জেলায় চলমান অস্থিরতাকে আমরা বাইরের আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা হিসেবেই দেখছি। এ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি শান্ত করতে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে সম্মিলিত রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। অভিজ্ঞ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে শলাপরামর্শ করুন। পার্বত্য জেলার নিরীহ বাঙালি ও উপজাতি সবাই আমাদের ভাইবোন। সবাই বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে সমঝোতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সেখানকার স্থানীয় দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সাথেও আলোচনায় বসে সমন্বয়পূর্বক কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

নেতৃদ্বয় আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে দেশি-বিদেশি চক্রান্তের বাস্তবতায় এটি আমাদের রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে দমন করতে হবে। সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে দেশের শত শত দেশপ্রেমিক ইমানদার যুবক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় পাশে থাকবে।

তারা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর শেখ মুজিব কর্তৃক ‘বাঙালি পরিচয়’ অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার হঠকারিতা থেকেই পাহাড়ে অশান্তির শুরু হয়। কিন্তু পরবর্তীতে মরহুম জিয়াউর রহমানের দূরদর্শী নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় পরিচয় হিসেবে বাংলাদেশি জাতীয়তা গৃহীত হওয়ার মধ্য দিয়ে পার্বত্য জেলার উপজাতিরা আত্মপরিচয়ের সংকট থেকে মুক্তি পায়। আমাদের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিকের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় স্বীকার করার পাশাপাশি কোটাব্যবস্থার মাধ্যমে পাহাড়ি উপজাতিদের দেশের মূলধারার জনসমাজের সাথে সংযুক্ত করারও ব্যবস্থা করেছে। অথচ পাহাড়ি বাঙালিরা সুবিধাবঞ্চিত সত্ত্বেও কোনো কোটা সুবিধা তাদের দেয়া হয় না।

আমাদের পাহাড়ে আদিবাসী বলে কিছু নেই উল্লেখ করে আরও বলেন, তরুণ প্রজন্মের জানতে হবে, ইতিহাসের রেকর্ড অনুসারে প্রায় ২৫০-৩০০ বছর আগে পার্বত্য অঞ্চলের এই ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলো বার্মা, ভারতের সেভেন সিস্টার্স ও আশপাশের অঞ্চল থেকে এসে বসতি গড়েছে। ১৯৯৭ সালে উপজাতি হিসেবেই তাদের সাথে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তাছাড়া পার্বত্য অঞ্চল কখনো বাঙালিদের ‘উপনিবেশ’ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়নি। ফলে কোনো দিক থেকেই তাদের আদিবাসী বলার যৌক্তিকতা দাঁড়ায় না।

কিন্তু পার্বত্য অঞ্চলকে আমাদের ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করে একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানানোর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র বহু পুরোনো। বিভিন্ন খ্রিস্টান মিশনারি এ উদ্দেশ্যে সেখানে এখনো সক্রিয়। এ ছাড়া পশ্চিমা ফান্ডের লোভে দেশের কিছু এনজিও এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ‘আদিবাসী’ প্রচারণায় তৎপর রয়েছে। এদেশের সেনা-জনতা বাংলাদেশবিরোধী এ ধরনের ষড়যন্ত্র কখনো বাস্তবায়িত হতে দেবে না ইনশাআল্লাহ। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী যে কোনো চক্রান্ত আমরা সর্বশক্তি দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আছি বলেন জানান তারা। এআরএস

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM