বিনোদন ডেস্ক: সময়টা ২০০৯ সাল, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি মতাদর্শ সাংস্কৃতিক তারকারা অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা অনুষ্ঠানে অঘোষিত নিষিদ্ধ করা হয় তাদের। এর মধ্যে ছিলেন সংগীতশিল্পীরাও। ভালো ভালো গানের কথা ও সুর এবং মানসম্মত গান তৈরির পরও সুযোগ হয়নি তাদের। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে বিভিন্নভাবে কণ্ঠ রোধ করে রাখা হয়েছে বলে জানালেন দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মনির খান।
তবে গত ৫ আগস্ট সাধারণ শিক্ষার্থী ও মানুষের রোষানলে পড়ে ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায়। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সব শিল্পীই এখন কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার বাংলাদেশ বেতারের গানে কণ্ঠ দিলেন মনির খান।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামালে বাংলাদেশ টেলিভিশন কিংবা বেতারে গানের সুযোগ না পেলেও, অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর ইতোমধ্যে চারটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন মনির খান। বুধবার একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান তিনি।
বাংলাদেশ বেতারের চারটি গানে কণ্ঠ দিলেও এর মধ্যে একটি গান প্রকাশ হওয়ার আগেই শুরু হয়েছে আলোচনা। কেননা, গানটি ‘বৈষম্যবিরোধী’। ‘এক মহাক্যাব্য লেখা হলো ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে / বাংলাদেশ নতুন করে পেয়েছি তোমায় ভালোবাসার ঐকতানে’, এমন কথায় গানটি লিখেছেন গীতিকার মুন্সি ওয়াদুদ। আর এর সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন মকসুদ জামিল মিন্টু।
এদিকে ‘বৈষম্যবিরোধী’ গানটি স্টুডিওতে রেকর্ডিংয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই প্রথমবারের মতো বেতার পরিদর্শন ছিল নাহিদ ইসলামের।
‘বৈষম্যবিরোধী’ গানটি সম্পর্কে তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী গায়ক মনির খান বলেন, গত সোমবার বেতারের স্টুডিওতে গানটি রেকর্ড করা হয়েছে। গীতিকার মুন্সি ওয়াদুদ, তিনি তো বরাবরই ভালো লেখেন। তার লেখনি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। আবার মকসুদ জামিল মিন্টু ভাইয়ের সুরের কথা কী বলব, অসাধারণ। সব মিলে অনেক সুন্দর একটি গান করেছি আমরা।
‘আট আনার জীবন’ খ্যাত সংগীত তারকা বলেন, গানটি রেকর্ডিংয়ের জন্য কিছুটা কম সময় পেয়েছি আমরা। তবে যথেষ্ট ছিল। আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, গানটি ভীষণ ভীষণে ভালো হয়েছে। এর থেকেও বড় বিষয় হচ্ছে, ‘বৈষম্যবিরোধী’ গান করার সময় স্টুডিওতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, তথা আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। আমাদের মতো তার কাছেও পছন্দ হয়েছে গানটি।
সবশেষ আওয়ামী সরকারের শাসনামের কথা উল্লেখ করে কোটি বাঙালির হৃদয়ে ঠাঁই করে নেয়া তারকা বলেন, একজন সাধারণ মানুষ বলেন আর সংগীতশিল্পী বলেন, একটা কথাই বলব―কখনো কোনো শিল্পীকে যেন কোনোভাবে তার সৃজনশীল কাজে বাধা প্রদান করা না হয়। শিল্পীদের সঙ্গে যেন প্রতিহিংসার রাজনীতি না হয়।
একে