নিজস্ব প্রতিবেদক: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেছেন, যারা স্বৈরাচারের হয়ে প্রত্যক্ষ কাজ করেছে, তাদের উৎসাহিত করেছে, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না। আমি এদের ভাইস-চ্যান্সেলর হতে চাই না। আমরা যারা দায়িত্বে আছি তারা আইনে বাধা। চাইলেও আমরা সবকিছু করতে পারি না। সবাইকে একসাথে চলতে হবে, স্বৈরাচারকে ঠেকাতে হবে এবং সবাই মিলে সফলতা অর্জন করতে হবে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলনের বিভিন্ন ব্যাচ ও বিভাগ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হল ও আবাসন সংকটের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমাদের হল নেই। এখানে ভিসি ভবনও নাই। আমি কোথায় থাকব তারও ঠিক নেই। আমি তো ক্যাম্পাসেই থাকতে চাই। কিন্তু এখানে থাকার জায়গা নাই। নতুন ক্যাম্পাসে টেম্পরারি থাকার ব্যবস্থা করা যায় কিনা সেটাও আমি ভাবছি। ১০ হাজার শিক্ষার্থীর থাকার ব্যবস্থা করা সহজ কিছু নয়। যা ১৯ বছরে হয়নি তা এক মাসে হয়তো হবে না। তবে আমরা অগ্রগতি জানাব। আমি তোমাদের ভিসি। আমরা সবাই মিলে সফল হবো।
উপাচার্য রেজাউল করিম আরো বলেন, আমাদের অডিটোরিয়ামে এসি সব নষ্ট। খোঁজ নিয়ে দেখলাম আমি যে সময়ে৷ বাসার এসি কিনেছি তা কবে নষ্ট হবে তার ঠিক নেই, কিন্ত এখানের সব এসি নষ্ট। আমরা জিরোতেও নাই, আমরা অলরেডি মাইনাসে আছি। কারণ এই এসি লাগাতে হলে আগে নষ্টগুলো সরাতে হবে। ভবনগুলো ঝুকিপূর্ণ, নতুন ভবন করতে হলে এগুলো ভাঙতে হবে। তখন শিক্ষার্থীরা ক্লাস করবে কোথায়? এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন বেগম খালেদাজিয়া। এখন তার নামফলকও নাই। সেগুলো পুনঃস্থাপন হবে। এসব নিয়ে আমরা কাজ করছি।
দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমি মাস্টার প্লান নিয়ে আলোচনা করেছি। কনসালট্যান্টের নিয়োগ দিয়ে সাথে সাথে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তরের কাজ করা হবে। আমি ক্যাম্পাসের কাজের মেয়াদ নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ওসচিবের সঙ্গে দেখা করেছি, তাদের বলেছি কাজ সময়মত হয়নি, টাইমটা যেন আরেকটু বাড়ানো হয়। তারা বলেছেন সময়টা বাড়ানো হবে।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, যাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, আমি বলেছি ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হবে না কিন্ত ছাত্র-রাজনীতির কালচার চেঞ্জ হবে। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র-রাজনীতি চলবে না। জকসু যতদ্রুত সম্ভব ততদ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। তাহলে আমাদের একটা স্পেসিফিক উইন্ডো হবে যেটা নিয়ে আমরা কাজ করতে পারব।
মানোন্নয়ন পরীক্ষায় জিপিএ পাওয়ার সীমাবদ্ধতার উঠিয়ে দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আগে রুলসে এটা ওপেন ছিলো। পরে সীমাবদ্ধতা আনা হয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ওপেন নাই। আমাদের সুযোগ থাকলে করে দেয়া যাবে কিন্তু পরে দেখা যাবে এটা অনেকেই বলবে বন্ধ করতে। দেখা যাবে, কেউ বি মাইনাস পেয়ে মানোন্নয়ন দিতে পারে, সে মানোন্নয়ন দিয়ে এ প্লাস পেলো। কিন্ত বি প্লাস পেয়ে একজন আর দিতে পারে না। এখানে তাইলে ওর বৈষম্য হলো না? তাহলে ওকেও সুযোগ দিতে হবে। সুযোগ দিতে হলে এ প্লাসের নিচে যে পাবে তাকেই সুযোগ দিতে হবে। কিন্ত তখন পরীক্ষার্থীর পরিমাণ বেড়ে যাবে, রেজাল্টেও দেরি হবে।
সমাবর্তনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমরা সবাই চাই সমাবর্তিন হোক। আমি ভাবছি নেক্সট কনভোকেশন নতুন ক্যাম্পাসে করতে পারি কিনা। একটা সমাবর্তনের প্রস্ততি নিতেই এক বছর চলে যায়। ততদিনে গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করতে পারলে ওখানেই করব। এ ছাড়া ধুপখোলা মাঠে লিগ্যাল রাইট দেয়ার আমাদের দেয়ার কথা আছে, দেয়া হলেই ওখানে আমাদের স্থায়ী কিছু করা হবে। লিগ্যালভাবে একবার যদি বসতে পারি তাইলে বাকিটা আমরা দেখে নেবো।
মতবিনিময় সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, হল প্রোভোস্ট, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক সহ বিভিন্ন বিভাগ ও ব্যাচ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এআরএস