শুক্রবার | ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শত্রুর মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চাতুর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে: ইমাম খামেনেয়ী

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ইমাম খামেনেয়ী বলেছেন, সামরিক অঙ্গনে শত্রুর মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের উদ্দেশ্য আতঙ্ক সৃষ্টি করে পিছু হটতে বাধ্য করা। তিনি আরো বলেছেন, সামরিক হোক কিংবা রাজনৈতিক, প্রচারণাগত বা অর্থনৈতিক, কোনো ক্ষেত্রেই কৌশল অবলম্বন ছাড়া পিছু হটার অনুমতি ইসলাম দেয়নি বরং কুরআনে বলা হয়েছে, এসব ক্ষেত্রে কৌশল ছাড়া পিছু হটলে ঐশী গজবের মুখে পড়তে বা আল্লাহর ক্রোধের শিকার হতে হবে।

তিনি রাজধানী তেহরানে ইরানের ‘কোহকিলুয়ে ও বুয়ের-আহমাদ’ প্রদেশের শহীদদের জাতীয় কংগ্রেসের সংগঠকদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন। শত্রুরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরানি জাতিকে পিছু হটতে বাধ্য করার জন্য মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ ও আতঙ্ক সৃষ্টি করছে বলে জানান ইমাম খামেনেয়ী। তিনি বলেন, শত্রুর এই অপকৌশল মোকাবিলা করার একমাত্র উপায় নিজের সক্ষমতা ও শক্তি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা রাখা এবং শত্রুর শক্তি ও সামর্থ্যকে অতিরঞ্জিত করে না দেখা। তিনি বলেন, ইরানের জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদগণ তাদের জিহাদ ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে শত্রুর এই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ প্রতিহত করেন ও ব্যর্থ করে দেন। পার্সটুডে ফার্সি জানাচ্ছে, ইমাম খামেনেয়ী বলেন, শহীদদের স্মরণ করার সময় আমাদেরকে এই বাস্তবতা তুলে ধরতে এবং তা বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইরানের শত্রুরা সব সময় এদেশের নাগরিকদের মনে আতঙ্ক তৈরি করে সামরিক দিক দিয়ে ইরানকে পিছু হটতে বাধ্য করার চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের পর থেকে তারা আমাদের জনগণের মনে এই ভয় ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে যে, আমাদেরকে সব সময় আমেরিকা, ব্রিটেন ও ইহুদিবাদীদের ভয় করে চলতে হবে।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের স্থপতি ইমাম খোমেনী (রহ.) ইরানি জাতির অন্তর থেকে এই ভয় দূর করতে এবং তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন বলে জানান সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেন, ইমামের আহ্বানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদের জাতি একথা উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় যে, তারা নিজস্ব সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে অনেক মহান কাজ করতে সক্ষম এবং শত্রু নিজেকে যতটা ভয়ঙ্কর হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করে আসলে সে ততটা ভয়ঙ্কর নয়।

ইমাম খামেনেয়ী বলেন, বিশ্বের যেসব দেশ আধিপত্যকামী শক্তিগুলোর দাবি-দাওয়ার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে তারা যদি তাদের নিজস্ব সক্ষমতা ও জনগণের ওপর নির্ভর করে এবং শত্রুর শক্তিকে অতিরঞ্জিত করে না দেখে তাহলে তারা আধিপত্যকামীদের দাবি-দাওয়াকে অকার্যকর করে দিতে পারবে।

সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে শত্রুর শক্তিকে অতিরঞ্জিত করে দেখার ফলাফল হলো নিষ্ক্রিয়তার অনুভূতি, শত্রুর সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হওয়া এবং নিজের সংস্কৃতিকে খাটো করা। তিনি বলেন, এই ধরনের নিষ্ক্রিয়তার ফলাফল হলো অন্যের জীবনধারাকে গ্রহণ করা, এমনকি নিজেদের কথাবার্তা ও আচরণে বিদেশি শব্দ ও অভিব্যক্তি ব্যবহার করা।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইরানের যেসব শহীদ ও মুজাহিদ ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে এবং শত্রুরা হুম্বিতম্বি উপেক্ষা করে তাদের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। তাদের আত্মত্যাগের বিষয়টিকে ইতিহাসে ধরে রাখার পাশাপাশি চলচ্চিত্রসহ নানা শৈল্পিক অঙ্গনে ফুটিয়ে তুলতে হবে।

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- Payra Team