শনিবার | ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুধ দিয়ে গোসল করে আওয়ামী লীগের দলত্যাগ ঘোষণা ইউপি চেয়ারম্যান

কুমিল্লা প্রতিনিধি : দুধ দিয়ে গোসল করে আওয়ামী লীগের দলত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও একই ইউপির চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মাসুদ। শনিবার দুপুরে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে দলত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। পরে নিজেকে পবিত্র করতে বাড়ির ছাদে গিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করেন।
গত ৪ আগস্ট আপনি ছাত্রদের ওপর ইট পাটকেল কেন মেরেছেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কখনোই চাইনি ছাত্র-জনতার বিপক্ষে যেতে, গত ৪ আগস্ট দেবিদ্বার সদরে কি হবে তা আমি জানতাম না। আমাকে দলের সিনিয়র নেতারা ভুল বুঝিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে গেছে। তারা আমাকে বলেছেন, বাংলাদেশ যে সব ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন তাদের স্মরণে শোক র‌্যালি করা হবে। তাই দেবিদ্বার স্বাধীনতা চত্বরে শোক র‌্যালি ও শোক সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে গিয়ে দেখলাম ছাত্র-জনতার সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়িয়েছে। আমি দুই গ্রুপের মাঝখানে পড়ে গিয়েছিলাম, আমি কাউকে ইট পাটকেল মারিনি।
এ সময় মাসুদ বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে আওয়ামী লীগ করেছি। কিন্তু সেই আওয়ামীলীগ এখন আর নেই, আওয়ামী লীগ এখন মানুষ হত্যা ও গুম করা সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে আমি আরও অতিষ্ঠ হয়ে পড়ি। ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবিকে না মেনে তারা সন্ত্রাসী বাহিনী ও পুলিশ দিয়ে নির্বিচারে নিরীহ ছাত্র, শিশু ও সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে। তারা আয়নাঘর বানিয়ে দিনের পর দিন নিরাপরাধ মানুষকে গুম করে রেখেছে। আমি এই দল করে লজ্জিত। তিনি আরও বলেন, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জনগণের ভোটে ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি, দলীয় চেয়ারম্যান নই।
আওয়ামী লীগ চোরের দল আখ্যা দিয়ে মাসুদ আরও বলেন, সন্ত্রাস দুর্নীতিতে ভরপুর আওয়ামী লীগ, আমি এ দলকে ঘৃণা করি। আমি আর জীবনেও এই দলের নাম মুখে নেব না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করে বলেন, আমি সব সময় চেয়েছি আমার এ ফতেহাবাদ ইউনিয়নবাসীর পক্ষে থাকার। তারা আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থেকে মামলা-হামলা ছাড়া কিছুই পাইনি। সব কিছু থেকে বারবার বঞ্চিত হয়েছি। আমি এ ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা আমাকে দেয়নি। সব সময় একই দলের অন্য নেতাকর্মীদের হাতে হামলার শিকার হয়েছি। আমি স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করাসহ নিজেকে আওয়ামী রাজনীতি থেকে সড়িয়ে নিলাম। আমি আর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। আমি আমার বাকি জীবনটা সমাজ সেবায় জড়িত থেকে কাটাতে চাই।

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- Payra Team