শনিবার | ৭ জুন, ২০২৫ | ২৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ডিমের শুল্ক প্রত্যাহারে এনবিআরকে ট্যারিফ কমিশনের চিঠি, সাড়ে ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে ডিমের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় আমদানির সিদ্ধান্ত থাকলেও উচ্চ শুল্ক হারের কারণে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে ডিমের আমদানিতে সাময়িক সময়ের জন্য শুল্কমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিসি)।

ওই চিঠিতে বলা হয়, বর্তমান সময়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ডিমের বাজারদর সহনশীল রাখার জন্য আমদানি শুল্ক সাময়িক সময়ের জন্য মুক্ত করার জন্য গত ২৯ আগস্ট বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন থেকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পেঁয়াজ, আলু ও ডিম আমদানিতে শুল্ক-কর হ্রাসকরণ বিষয়ে একটি বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন তাঁর দপ্তরে পাঠানো হয়।

প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী, গত ০৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক আলু ও পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। এতে অনুসন্ধান করে জানা যায় যে, স্থানীয় বাজারে এ দুটো পণ্যের মূল্যে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। অন্যদিকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ডিম আমদানিতে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী শুল্ক ছাড়ের বিষয়ে এখনো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। সম্প্রতি, স্থানীয় বাজারে ডিমের পর্যাপ্ত সরবরাহে ঘাটতিজনিত কারণে এর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।

রাষ্ট্রায়াত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসেবে, ডিমের স্থানীয় মূল্য গত এক মাসে ১৫ শতাংশ এবং এক বছরে ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ বেড়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রতিক বন্যার কারণে পোলট্রি শিল্পের ক্ষতি হওয়ায় এবং পরিপূরক অন্যান্য খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় বাজারে ডিমের সরবরাহব্যবস্থায় একধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর নিমিত্তে দেশের পোলট্রি শিল্পের সুরক্ষা বিবেচনায় সুনির্দিষ্ট মেয়াদে শুল্ক ছাড়ের মাধ্যমে ডিম আমদানির অনুমতি প্রদান করা হলে পোলট্রি শিল্পের োপর নেতিবাচক প্রভাবের সম্ভাবনা কম বলে কমিশন মনে করে। এ ছাড়া ডিম শর্ত সাপেক্ষে আমদানিযোগ্য পণ্য হওয়ায় সরকারের অনুমতি ছাড়া ডিম আমদানি করা যায় না।

অন্যদিকে গত বছরগুলোতে ডিম আমদানি না হওয়ার স্বল্প মেয়াদে এই শুল্ক-করাদি ছাড়ের ফলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতিরও আশঙ্কা নেই। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, বর্তমান ডিমে শুল্ক-কর মোট ৩৩ শতাংশ অব্যাহত রাখলে আমদানিকৃত ডিম দিয়ে স্থানীয় বাজারে দামের তেমন তারতম্য ঘটবে না। তাই কমিশন কর্তৃক ইতিপূর্বে পাঠানো প্রতিবেদনের আলোকে আমদানি পর্যায়ে ডিমের ওপর শুল্ক-করাদি স্বল্প সময়ের জন্য প্রত্যাহার করা হলে সাধারণ জনগণ এই সময়ে স্বস্তির জায়গা খুঁজে পাবে।

এমতাবস্থায়, স্থানীয় বাজারে উচ্চমূল্যের প্রবণতা রোধে এবং বৃহৎ জনস্বার্থে উপর্যুক্ত সূত্রে পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য হিসেবে স্বীকৃত ডিমের ওপর সুনির্দিষ্ট মেয়াদে শুল্ক-কর প্রত্যাহার করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুনরায় অনুরোধ করা হলো।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আজই সাতটি প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ পর্যন্ত এই ডিম আমদানি করা যাবে।

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM