ডেস্ক রিপোর্ট: এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ইসলামী ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় আটজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদেরর মধ্যে একজন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) ও পাঁচজন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি)। বাকী দুজন ব্যাংকের দুটি বিভাগের প্রধান রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কর্মকর্তাদের চাপের মুখে তাদের বরখাস্ত করা হয়।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বরখাস্ত কর্মকর্তাদের সবাই এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দিন। তিনি এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের একান্ত সচিব ছিলেন। বরখাস্ত আরেকজন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মিফতাহ উদ্দিন ব্যাংকের ঋণের দায়িত্বে ছিলেন। তারা দুজন ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ ও মানবসম্পদ বিষয়গুলো দেখতেন।
বরখাস্ত বাকি কর্মকর্তারা হলেন, ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে কিউ এম হাবীবুল্লাহ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাব্বির, কাজী মো. রেজাউল করিম ও মো. আবদুল্লাহ আল মামুন। এ ছাড়া প্রধান অর্থ পাচার প্রতিরোধ কর্মকর্তা (ক্যামেলকো) তাহের আহমেদ চৌধুরী ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল মো. নজরুল ইসলামকে বরখাস্ত করেছে ব্যাংকটি।
এর আগে, এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ছয় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ওপর ঋণ বিতরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা বাংলাদেশ ব্যাংকের এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব ব্যাংক নতুন করে ঋণ বিতরণ করতে পারবে না। আগের ঋণ নবায়নও করতে পারবে না।
শুধু ঋণ নয়, এসব ব্যাংকের মালিকানা নিজেদের কব্জায় রাখতে নামে-বেনামে কোম্পানি খুলে শেয়ার ধারণ করেছে প্রভাবশালী গ্রুপটি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মুখে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইসলামী ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের নগদ টাকা সরাতে গিয়ে ব্যর্থ হয় এস আলম গ্রুপ। এর পরেই গত সপ্তাহে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ব্যাংকসহ মোট নয়টি ব্যাংকের ইস্যুকৃত ১ কোটি টাকা বা তার বেশি টাকার চেক অন্য কোনো ব্যাংকের মাধ্যমে নগদায়ন বন্ধের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
উল্লেখ্য, বিদায়ী সরকারের আমলে ব্যাংক খাতে ঋণ কেলেঙ্কারি, দখল, লুটপাট ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। ইসলামী ব্যাংকসহ প্রায় আটটি ব্যাংক দখলে নেয় এস আলম গ্রুপ। এসব ব্যাংক দখলে নেওয়ার পর থেকে নামে-বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয় এস আলম গ্রুপ। ফলে, চরম আর্থিক সঙ্কটে রয়েছে ব্যাংকগুলো। এআরএস