আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন, তা তার মরদেহ দেখেই অনুমান করা গিয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, ধর্ষনের পর ওই চিকিৎসককে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছিল। এবার তার ওপরে কী পরিমাণ নারকীয় অত্যাচার চালানো হয়েছিল, তা স্পষ্ট ধরা পড়লো ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, শরীরের মোট ২৪টি জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নির্যাতনের শিকার চিকিৎসকের শরীরের বাইরে ১৬টি ও শরীরের ভেতরে ৮টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সেই আঘাতগুলো চিকিৎসকের ভাষায় ‘অ্যান্টি মর্টেম’ অর্থাৎ মৃত্যুর আগেই করা হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে এই মৃত্যুর ধরন হলো ‘হত্যা’।
আর জি কর মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরত নারী স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ও একই হাসপাতালে ট্রেইনি (পিজিটি) চিকিৎসক মৌমিতা দেবনাথের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, মাথা, গাল, ঠোঁট, নাক, ডান চোয়াল, চিবুক,গলা, বাঁ হাত, বাঁ কাঁধ, বাঁ হাটু, গোড়ালি ও যৌনাঙ্গে ক্ষতচিহ্নের প্রমাণ মিলেছে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নিহত নারী চিকিৎসকের ফুসফুসে রক্ত জমাট বেঁধেছিল। শরীরের আরও কিছু অংশে রক্ত জমাট বেঁধে ছিল। যৌনাঙ্গে জোরপূর্বক কিছু প্রবেশ করানো হয়েছিল তারও প্রমাণ মিলেছে। তবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মৌমিতার গলার ও পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছিল বলে তোলপাড় ওঠে। কিন্তু ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তার শরীরের হাড় ভেঙেছে বলে উল্লেখ করা হয়নি।
এছাড়া অভিযোগ উঠেছিল, মৌমিতার দেহে ১৫০ গ্ৰাম সিমেন মিলেছে। তার পরিবার থেকে কলকাতা হাইকোর্টে যে পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল, সেখানেও এই বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে সিমেন পাওয়া গেছে বলেও উল্লেখ করা হয়নি। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলে প্রথমে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া পায় কলকাতা পুলিশ। পরবর্তীকালে কলকাতা পুলিশের তদন্তে ভরসা রাখতে না পেরে মৌমিতার পরিবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম নির্দেশে মামলার তদন্তভার যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের কাছে। এর মধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এই মামলাটি হাতে নিয়েছে। মঙ্গলবার (২০ আগষ্ট) মামলার শুনানিতে উপস্থিত থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ।
আইএফ