রবিবার | ১৫ জুন, ২০২৫ | ১ আষাঢ়, ১৪৩২

প্রধান শিক্ষকের রুমে যৌনকর্মের সরঞ্জাম, স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি

জেলা প্রতিনিধি, পাবনা: যৌন হয়রানি, বিদ্যালয়ের অর্থ লুটপাট ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কৃত পাবনা শহরের টাউন গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল করিম ফিরোজের অফিস কক্ষের আলমারি থেকে যৌন উত্তেজক সিরাপ, কনডম, মদসহ যাবতীয় অনৈতিক কাজের জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা। তার স্থায়ী বহিষ্কার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই মানববন্ধন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এর আগে সোমবার (২১ অক্টোবর) প্রধান শিক্ষকের রুমের আলমিরার তালা ভেঙে যৌন উত্তেজক সিরাপ, কনডম, মদসহ অনৈতিক কাজের জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, এই স্যার অনেক মেয়ের সঙ্গেই খারাপ কাজ করেছে। অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভয়ভীতি দেখিয়ে খারাপ কাজ করার পরও তার পক্ষে লিখিত সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করেছে। অনেক মেয়ের সঙ্গে খারাপ কাজ করে স্কুল ছেড়ে চলে যেতে হয়। অনেকের পরিবারকে চাপ দিয়ে অল্প বয়সেই তাকে বিয়ে দিতে বাধ্য করেছেন। আমাদের গায়ে হাত দেয় এবং মুখে হাত দিয়ে বলে গালটা অনেক নরম। গায়ে হাত দিয়ে বলে তোদের ব্রা পড়ার বয়স হয়েছে। কোলে তুলে নিয়ে অশ্লিল ভিডিও দেখান। দেখতে না চাইলে তাকে বকাঝকা করে।
শিক্ষকরা বলেন, প্রধান শিক্ষক রবিউল করিম ফিরোজ মাস্টারের অফিস রুম থেকে গতকাল যৌন উত্তেজক সিরাপ, কনডম, মদসহ অনৈতিক কাজের সরঞ্জামাদী উদ্ধার করা হয়েছে। ছাত্রীদের সঙ্গে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে অনেক স্ক্রিনশর্ট আছে যেগুলো দেখলে গা শিউরে উঠে। এই প্রধান শিক্ষকের লুচ্চামির জন্য অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। শিক্ষার্থীর ঘাটতি হয়েছে। সদরের দুবলিয়া ফজিলাতুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক থাকাবস্থায় সেখানে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়। এরপর অর্থের বিনিময়ে শহরের সেলিম নাজির উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। এই দুই বিদ্যালয়ে অনেক নাটকীয়তার জন্ম দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট টাউন গার্লস হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন।
উল্লেখ্য, দুর্নীতিবাজ-চরিত্রহীন আখ্যা দিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর সম্প্রতি একটি স্মারকলিপি ও লিখিত অভিযোগ দেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এরপর যৌন নিপীড়ন, অর্থ কেলেঙ্কারি ও বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় গত ১ অক্টোবর সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এর আগেও একাধিবার সাময়িক বহিষ্কার হয়েছিলেন তিনি।
এবিষয়ে সাময়িক বহিষ্কৃত পাবনা টাউন গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত রবিউল করিম ফিরোজের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
বিদ্যালয়ের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, যৌন নিপিড়নের অংশ হিসেবেই তাকে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা রিপোর্ট দিলেই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM