বুধবার | ২১ মে, ২০২৫ | ৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ইসলামে ক্যালিওগ্রাফি চর্চা

নিজস্ব প্রতিনিধি: ঘরবাড়ি ও সামাজিক পরিবেশের নান্দনিক শোভাবর্ধনের জন্য ক্যালিগ্রাফি সভ্যতার প্রথম দিকেই উদ্ভব হয়েছিল। তখন মসজিদ, মাদরাসা, খানকা ও প্রতিটি প্রশাসনিক ইমারতে চমৎকার ক্যালিগ্রাফির মুনশিয়ানা ফুটে উঠেছিল। উপমহাদেশে ১২০৫ সালে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির বাংলা বিজয়ের মাধ্যমে শিলালিপিতে আরবি ও ফারসি ক্যালিগ্রাফির যাত্রা শুরু হয়। অবশ্য বাংলাদেশে সাহাবায়ে কিরামের আগমন এবং লালমনিরহাটে হারানো মসজিদের শিলালিপিতে কালেমা তাইয়্যিবা ও ৬৯ হিজরি সন লেখা থেকে সুস্পষ্ট হয় যে আরব ভূখণ্ডই ইসলামী ক্যালিগ্রাফির সূতিকাগার।

ইসলামী ক্যালিগ্রাফির মধ্যে আরবি অক্ষর, শব্দনৈপুণ্য ও সৃষ্টির দক্ষতাই মূল। বৈধতার ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রতীক এবং লতাপাতা ও ব্যবহার করা হয়। সাঈদ বিন আবিল হাসান (রহ.) বলেন, আমি একবার আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর কাছে ছিলাম।

তখন তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এলো। লোকটি এসে বলল, হে ইবনে আব্বাস! আমার উপার্জনের নির্ভরতা আমার হাতের সৃষ্টির ওপর, আমি ছবি আঁকি। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি তোমার কাছে সেই কথা বর্ণনা করছি, যা আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এটা বলতে শুনেছি যে যেই ব্যক্তি ছবি বানায়, তাকে আল্লাহ তাআলা শাস্তি দিতে থাকবেন, যতক্ষণ না সে ওই ছবিতে প্রাণ দিতে পারে, আর ওই ব্যক্তি কোনো দিন তাতে প্রাণ দিতে পারবে না। এ কথা শুনে লোকটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।

আর তার চেহারা পাংশু হয়ে গেল। তখন আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আরে ভাই! যদি তুমি বানাতেই চাও, তাহলে গাছের ছবি আঁকো। আর সেসব বস্তুর ছবি আঁকো, যাতে প্রাণ নেই। (বুখারি, হাদিস : ২১১২)
সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ক্যালিগ্রাফি নিয়ে তুমুল আলোচনা ও দেয়াল রাইটিংয়ের যেন প্রতিযোগিতা চলছে। শহর-গ্রামের বিভিন্ন দেয়ালে অন্যায়ের প্রতিবাদ ও গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের চিত্র ফুটে উঠছে। নিঃসন্দেহে এটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। শিক্ষার্থীদের হাতে গড়া নতুন বাংলাদেশের সৌন্দর্যের প্রতীক।

কিন্তু সাবধানতার অনেক বিষয়ও আছে। অন্তত ছবি আঁকার ব্যাপারে শিল্পীদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। আমাশ (রহ.) মুসলিম (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুক (রহ.)-এর সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম। তিনি তাঁর ঘরে প্রাণীর ছবি দেখতে পেয়ে বলেন, আমি আবদুল্লাহর কাছে শুনেছি, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে ওই ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা কঠিন শাস্তি দেবেন, যে প্রাণীর ছবি তৈরি করে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৪২৬) এআরএস

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM