শুক্রবার | ২০ জুন, ২০২৫ | ৬ আষাঢ়, ১৪৩২

শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধে তীব্র যানজট, পথচারীদের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর সাতটি কলেজের জন্য স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কমিশন গঠন করার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সায়েন্সল্যাব অবরোধ করেছেন এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৩০ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে এসে শিক্ষার্থীরা সাইন্সল্যাবে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু করেন।
সাত কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও আজ বেলা ১২টা থেকে বিক্ষোভ করছেন ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. নেয়ামুল হক ও উপাধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমানের পদত্যাগ এবং আগের অধ্যক্ষ অধ্যাপক বেদর উদ্দিনকে পদে ফিরিয়ে আনার দাবিতে কলেজের মূল ফটকে বিক্ষোভ করেছেন। এর ফলে ধানমন্ডি সাত মসজিদ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশ নেবেন না এবং ক্লাসেও ফিরবেন না তারা।
অন্যদিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরাও বলেছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথে থাকবেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে শহরজুড়ে আজ তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, সায়েন্সল্যাব, মিরপুর রোড, এলিফ্যান্ট রোড সংলগ্ন সব রাস্তায় যানজট তৈরি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রী ও পথচারীরা।
সাত কলেজ এবং সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও আজ সড়কে নেমেছেন ৩৫ প্রত্যাশীরা। তারা সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে সেই এলাকাতেও যানজট।
শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধে স্থবির যান চলাচলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পথচারীরা। শরিফুল ইসলাম নামের একজন পথচারী বলেন, আমরা কী দোষ করেছি। প্রতিদিন সড়ক অবরোধ করে জনভোগান্তি সৃষ্টি করে অথচ সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয় না। এই সরকার তো শিক্ষার্থীদের সরকার তাহলে কেন শিক্ষার্থীরা বারবার সড়কে নামছে। আমাদের দোষ হচ্ছে আমরা এই দেশের নাগরিক। কিছু হলেই আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হবে। আমাদের আগেও দুর্ভোগ ছিল, এখনও আছে।
সুলতান বেগম নামের একজন পথচারী বলেন, আমার মেয়ের পরীক্ষা আছে। তাড়াতাড়ি পরীক্ষার হলে যেতে হবে নয়তো পরীক্ষার হলে ঢুকতে পারবে না। তাই রিকশা থেকে নেমে হেঁটে যাচ্ছি।
এই পথচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, কিছু থেকে কিছু হলেই সড়ক অবরোধ করে দাবি আদায়ের যে অপসংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তা বন্ধ করতে হবে। আগে দাবি দাওয়া ছিল প্রেসক্লাব কেন্দ্রিক। সেখানে সবাই তাদের দাবি আদায়ের জন্য প্লে কার্ড বা ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে দাঁড়াতেন। এখন সবাই সড়ক অবরোধ করে। এই সংস্কৃতি বন্ধ না হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি থেকে যাবে।
সায়েন্সল্যাব এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা চালক সাব্বির হোসেন বলেন, সকাল সকাল হোন্ডাটা নিয়ে বের হয়েই একটা যাত্রী পেয়েছি। কিন্তু সায়েন্সল্যাব এসেই আটকে গেছি। সড়ক অবরোধের কারণে যাত্রী অতিষ্ঠ হয়ে নেমে চলে গেছে। আমি তিন ঘণ্টা ধরে এখানেই দাঁড়িয়ে আছি। শিক্ষার্থীদের অনেক রিকোয়েস্ট করার পরেও তারা আমার হোন্ডাটা যেতে দেয়নি। দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে, অথচ এখনও এক টাকাও ইনকাম করতে পারিনি, দুঃখের কথা আর কাকে বলবো।

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM