নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষি ভিসায় ইতালি পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে জিম্মি করে পরিবারের কাছে থেকে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় মানবপাচার চক্রের এক নারী সদস্যকে গ্রেফতার করেছে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতের নাম— কল্পনা বেগম (৩৬)।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া বিভাগের ডিসি তালেবুর রহমান।
ডিএমপির এই কর্মকর্তা জানান, মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বেপারী গত ২ অক্টোবর হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় বুধবার রাতে কামরাঙ্গীরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এই নারীসহ অন্যরা মিলে এই ব্যক্তিকে ইতালিতে কৃষি কাজের চাকরি দেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে যায়। পরে তারা তাকে সেখানে নিয়ে জিম্মি করে টাকা আদায় করে। পরে ভুক্তভোগীর পরিবার তাদের কথামতো ১৫ লাখ টাকা অপহরণকারী চক্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠায়। এরপরও তারা তাকে দেশে ফেরত পাঠায়নি। শেষে সেই ব্যক্তিকে লিবিয়া পুলিশের মাধ্যমে দেশে ফেরত আনা হয়।
হাতিরঝিল থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে বলা হয়, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে গ্রেফতারকৃত কল্পনা বেগম ও তার সহযোগীরা কৃষি ভিসায় ইতালি পাঠানোর কথা বলে নুরুল ইসলামকে লোভ দেখান। তাদের প্রলোভনে ইতালি যাওয়ার জন্য একমত হন তিনি। পরে তারাই তাকে পাসপোর্ট ও ভিসা করিয়ে দেয়। বছরের গত ২০ জুলাই বিদেশ যাওয়া বাবদ নুরুল ইসলাম তাদেরকে ১০ লাখ টাকাও দেন। পরে তারা তাকে প্রথমে দুবাই ও পরে লিবিয়া নিয়ে যায়। সেখানে মানবপাচারকারী চক্রের হাতে তুলে দেয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, সেখানে চক্রটির সদস্য জামির ও ইসমাইল তাকে ইতালি না পাঠিয়ে জিম্মি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। তারা তার স্ত্রীকে ফোন করে নানা হুমকি দিয়ে বলে দেশে থাকা তাদের সদস্য আব্দুল লতিফের কাছে আরও ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে। বাধ্য হয়ে তার স্ত্রী জমি বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা দেশে থাকা পাচারকারী চক্রের সদস্যদের বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে ও বিকাশের মাধ্যমে দেন। টাকা পাওয়ার পরও তারা তাকে দেশে বা ইতালি পাঠায়নি। পরে গত ১১ জুন লিবিয়া পুলিশের সহায়তায় ছাড়া পেয়ে নুরুল ইসলাম দেশে ফিরে আসেন।
গ্রেফতারকৃত কল্পনা বেগমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এমএফ