নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: টাকা না দিলে সরকারি স্থাপনা নির্মাণ কাজের স্থাপত্য নকশা দেন না স্থাপত্য অধিদপ্তরের সার্কেল ৪-এর ১২ নম্বর বিভাগের নির্বাহী স্থপতি মোহসেনা সিদ্দিকা। এছাড়াও সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের স্থাপনা নির্মাণ কাজের ঠিকাদারদের নানারকম হয়রানি, বিভিন্ন কোম্পানির প্রডাক্ট সিলেকশনের কমিশন আদায়সহ নানা অভিযোগ থাকলেও বহাল তবিয়তেই রয়েছেন তিনি।
সারা বাংলাদেশে নির্মান কাজের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত গণপূর্ত অধিদপ্তর। গণপূ্র্ত অধিদপ্তরের যেকোন ধরনের নির্মান কাজে স্থাপত্য নকশা প্রণয়নের গুরুদায়িত্ব পালন করে থাকে স্থাপত্য অধিদপ্তর। এই নকশা প্রণয়নে সরকারীভাবে কোন খরচ নেয়ার নিয়ম না থাকলেও সেটাই যেনো নিয়মে পরিণত করেছেন এই মোহসেনা সিদ্দিকা।
ঢাকাসহ সারাবাংলাদেশের যতোগুলো স্থাপনার দায়িত্বে মোহসিনা রয়েছেন তার প্রতিটি কাজের স্থাপত্য নকশা প্রণয়ন, থ্রিডি নকশা প্রণয়নে মোহসেনা সিদ্দিকা ঠিকাদারের কাছে মোটা অংকের ঘুষ দাবি করে বসেন। ঘুষ না দিলে নকশা সময়মতো প্রণয়ন না করা, বিলম্বে নকশা প্রদানসহ নকশাতে নানাবিধ পরিবর্তন করে ঠিকাদারদের হয়রানি করেন। যাতে সরকারি নির্মাণ কাজে বিলম্ব ঘটে।
শুধুমাত্র নকশা প্রণয়ন এবং থ্রিডি কাজই নয় বিভিন্ন মেটেরিয়ালস সিলেকশনেও কোম্পানী থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে থাকেন এই মোহসেনা সিদ্দিকা। সরকারের বড় বড় মেগা প্রজেক্টে টাইলস, সিপি ফিটিংস, ফিক্সচার, গ্রানাইট, গ্লাস, মার্বেল ইত্যাদি ফিনিশিং আইটেম পছন্দের কোম্পানীকে দেয়ার জন্য ও ঠিকাদারদের চাপ দিয়ে থাকেন তিনি।
ঢাকার বাইরের ভুক্তভোগী কয়েকজন ঠিকাদার মোহসেনা সিদ্দিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। এছাড়া বঞ্চিত হওয়া একাধিক মেটেরিয়ালস কোম্পানীর প্রতিনিধিরাও মুখ খুলতে শুরু করেছেন। অভিযোগ রয়েছে নিজের পছন্দের লোক দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের সংস্কার কাজ করানোর জন্যও ঠিকাদারদের চাপ দেয় মোহসেনা। এই মুহুর্তে মোহসেনার হাতে থাকা পাবনা মানসিক হাসপাতালকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরন প্রকল্প, পাবনা মিডওয়াইফারী ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও সরকারী কর্মচারী হাসপাতালকে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীতকরন প্রকল্পটি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এই মোহসেনার জন্য।
এইসব অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে মোহসেনা সিদ্দিকা বলেন, মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার কোনো পারমিশন তার নেই। একই বিষয়ে প্রধান স্থপতি মীর মঞ্জুরুর রহমানের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি তাকে সাড়া দেননি। সুন্দরী এই মোহসেনাকে নিয়ে মঞ্জুরের নানা গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে স্থাপত্য অধিদপ্তরে।
সরকারি প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য বর্তমান বৈষম্যহীন বাংলাদেশের সরকার যেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে সেখানে মোহসেনা সিদ্দিকার নীরব দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার যেনো কেউ নেই। মোহসেনার দুর্নীতি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশা করছে সবাই।
###