নিজস্ব প্রতিবেদক: মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ২০১৩ সালে ঘটে যাওয়া চার হত্যাকান্ডের ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে নতুন আরেকটি মামলাসহ মোট ৩টি হত্যা মামলা হয়েছে। এর আগে অক্টোবরে তার বিরূদ্ধে আরও দুইটি হত্যা মামলা হয়।
সোমবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নতুন এই মামলা করা হয়। মামলার বাদী হয়েছেন নিহত আলমগীর হোসেনের স্ত্রী, সিংগাইরের গোবিন্দল মোল্লাপাড়া গ্রামের রাফেজা (৩৭)।
সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বলেন, ‘২০১৩ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি চার হত্যাকান্ডের আরেকটি নতুন হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমসহ ৮২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
একই মামলায় আরও আসামী করা হয়েছে তৎকালীন মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার,ডিবি পুলিশের একাধিক পরিদর্শক, ৩৭ পুলিশ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতাসহ ৮২ জনকে।
রাফেজার দায়ের করা মামলায় মমতাজ বেগমের পাশাপাশি আরও আসামী হলেন, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বলধরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান ভিপি শহিদ (৫০) ,সদ্য বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান সায়েদুল ইসলাম (৫০)।
এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রমজান আলী চেয়ারম্যান, শওকত হোসেন বাদল,সিংগাইর দলিল লেখক সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক, আজিমপুরের মৃত নুরুল হক ফকিরের ছেলে মনিরুল ইসলাম পলাশ (৪০)সহ ৮২ জন।
পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আসামী করা হয়েছে তৎকালীন দায়িত্বে থাকা মানিকগঞ্জ সদরের সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ ডিবি পুলিশের ওসি মো. মহিবুল আলম, মদন মোহন বণিক, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, সিংগাইর থানার এস আই আদিল মাহমুদ, মোজাম্মেল হোসেনসহ ৩৭ জনকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২০১৩ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক সকাল ১০টার হতে দুপুর ১ ঘটিকা পর্যন্ত সময়ে ইসলাম ও সমমনা দল সমূহের পূর্ব ঘোষিত সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালনকালে সিংগাইর গোবিন্দল নতুন বাজারের চার রাস্তার মোড়ে ধর্মপ্রাণ ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে জনসমাবেশ চলছিল। এ সময় সমাবেশে মামলার আসামীদের ছোড়া গুলিতে আলমগীর,নাসির, নাজিমুদ্দিন মোল্লা ও শাহ আলমসহ নিহত হন চারজন গ্রামবাসি।
মামলার বাদী রাফেজার অভিযোগ, পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ দায়িত্ব পালন না করে উল্টো এলোপাথারী গুলি বর্ষণ করে হত্যাকান্ডে অবৈধভাবে অংশগ্রহণ করেন।
রাফেজা আরও জানান, তার স্বামীর দাফনের কাজে ব্যস্ত থাকায় পরিবারের পক্ষে মামলার স্বাক্ষী মিঠু চেয়ারম্যান এজাহার মামলা করতে যান। তবে থানা কর্তৃপক্ষ তার মামলা গ্রহণ না করে উল্টো হুমকি দিয়ে তাকে থানা থেকে বের করে দেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম আত্মগোপনে রয়েছেন।
এমএফ