সোমবার | ১৬ জুন, ২০২৫ | ২ আষাঢ়, ১৪৩২

সংস্কার কমিশন ঘোষণার পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও কাজ শুরু হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক:ঘোষণার পর প্রায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও শুরু হয়নি চার সংস্কার কমিশনের কাজ। এমনকি কমিশনগুলো গঠনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়াও শেষ হয়নি এখন পর্যন্ত। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এর বাইরে উপদেষ্টা পরিষদ অন্য যে সংস্কার কমিশনগুলো গঠনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তা এখনো অফিশিয়ালি অনুমোদন হয়নি। ফলে ওই সব সংস্কার কমিশন গঠন করে এখনো গেজেট প্রকাশ করা হয়নি।
গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খানকে প্রধান করে স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদকে প্রধান করে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন, শ্রমিক অধিকার নেতা সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে শ্রমিক অধিকারবিষয়ক সংস্কার কমিশন এবং শিরীন পারভীন হককে প্রধান করে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত এই চারজনের কেউই সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো চিঠি পাননি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ বিষয়ে শিরীন পারভীন হক গতকাল বলেন, ‘আমার হাতে এখনো কোনো কাগজ আসেনি। সরকারের কাছ থেকে আমি কোনো চিঠিও পাইনি।’
কবে নাগাদ কাজ শুরু হতে পারে জানতে চাইলে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, ‘বলতে পারছি না, ওটা সরকার বলতে পারবে। কারা সদস্য হবে, সে বিষয়েও কিছু বলতে পারছি না। পত্রিকায় দেখলাম, ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে তারা সব চূড়ান্ত করবে।’
একই রকম কথা জানান শ্রমিক অধিকারবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এখনো কোনো চিঠি পাইনি। তবে সরকারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে।’
তবে সুলতান উদ্দিন বলেন, ‘আমরা অনানুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছি। আমরা কার্যপরিধি তৈরি করেছি, কী কী করব। কাদের সাথে মতবিনিময় করব, তার তালিকা তৈরি করেছি। একটা কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছি।’
সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ জানান, শ্রমিক অধিকার কমিশনে তিনিসহ মোট ১০ জন সদস্য থাকবেন বলে জেনেছেন। তবে কারা থাকবেন, সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপন হওয়ার আগে চূড়ান্তভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, সদস্যদের মধ্যে মালিকদের প্রতিনিধি থাকবেন, শ্রমিকদের প্রতিনিধি থাকবেন, গবেষক থাকবেন দুজন, মানবাধিকার নেতা থাকবেন একজন, অর্থনীতিবিদ থাকবেন।
ঘোষিত সংস্কার কমিশনগুলোর ক্ষেত্রে কিছুটা দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক এবং দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান গতকাল বলেন, ‘যে চারটি সংস্কার কমিশনের ঘোষণা দেওয়া আছে, সবগুলোই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর তো প্রাধান্য পাওয়ারই কথা এবং প্রাধান্য পেয়েছেও। তবে ঘোষণার পরে কেন এত বিলম্ব হচ্ছে, সেটা প্রশ্নবিদ্ধ। এটা সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা করা উচিত।’
রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে ছয়টি কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন। এরপর গত ৩ অক্টোবর এই ছয়টির মধ্যে সংবিধান সংস্কারবিষয়ক কমিশন বাদে বাকি পাঁচটির পূর্ণাঙ্গ কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি হয়। ৭ অক্টোবর জারি হয় সংবিধান সংস্কারবিষয়ক কমিশন। বর্তমানে এই ছয়টি কমিশনের কাজ চলছে।

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM