আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়াহকে হত্যার পর ইসরাইলের বিরুদ্ধে যে কোনো সময়ে পাল্টা হামলা করতে পারে ইরান। এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সময় ও পরিস্থিতি বুঝে ইরান এমন হামলা চালাবে যে ইসরায়েল ভাববারও সময় পাবে না।
ইসমাইল হানিয়াহ এবং ফুওয়াদ শেকারের নিহতের পর, ইরানের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধ শক্তিগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘোষণা করেছিলেন যে, তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই শহীদদের রক্তের প্রতিশোধ নেবে।
ইসরায়েলি রেডিও স্বীকার করেছে, হানিয়াকে হত্যার পর, ইহুদিবাদীরা এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ হিসাবে প্রতিরোধ শক্তিগুলোর পক্ষ থেকে পাল্টা প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছে। ইসরায়েলে রাস্তায় সুনসান নীরবতা এবং প্রতিটি ইহুদিবাদীদের মুখে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার কথা উল্লেখ করে ইসরায়েলি রেডিও এ অবস্থাকে করোনা সময়ের অবস্থার মতো বলে বর্ণনা করেছে।
ইসরায়েলের প্রচারমাধ্যমগুলো সীমান্তের ক্রসিং পয়েন্ট, বিমানবন্দরে বহু ফ্লাইট বাতিল হওয়া যাওয়া এবং যাত্রীদের দুরবস্থার বিষয়েও কথা বলেছে। ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও তাদের মিত্রদের সহায়তায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার ধরণ, উদ্দেশ্য ও সময় জানার চেষ্টা করছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তেহরান ও বৈরুতে সম্প্রতি ইসরাইলের সন্ত্রাসী হামলার পর ইরান ও হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে পাল্টা প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় ইসরায়েলের অর্থনৈতিক, সামরিক, নিরাপত্তা, সাইবার এবং গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
ইসরায়েল সামরিক, নিরাপত্তা, গোয়েন্দা ও সাইবার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়া ছাড়াও, চলমান গাজা যুদ্ধের কারণে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগছে অন্যদিকে লোহিত সাগর, ভারত মহাসাগর ও আরব সাগরে ইয়েমেনিদের সশস্ত্র বাহিনীর অভিযানের ফলে ইসরায়েলের অর্থনীতিতে নতুন করে বিপর্যয় নেমে এসেছে।
বর্তমানে গাজা যুদ্ধ এবং ইয়েমেনিদের পাল্টা প্রতিরোধের কারণে সমুদ্র বাণিজ্যে ইসরায়েল যে বিপদে পড়েছে তা গাজা অবরোধ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত এবং খাদ্য,ওষুধ এবং অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিস এই অঞ্চলে না পৌঁছানো পর্যন্ত ইসরায়েল এ বিপদ থেকে মুক্ত হবে না।
কিছুদিন আগে মিডিয়াগুলো এমন ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছিল যে, যদি যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা এবং বন্দীদের বিনিময়ের বিষয়ে দোহা আলোচনা সফল হয় তবে এটি কঠোর অবস্থান থেকে ইরানকে বিরত রাখতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ইসরাইল আলোচনার টেবিলে কেবল তার নিজের স্বার্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। এমনকি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনের প্রচেষ্টাতেও কোনো কাজ হয়নি।
এনএইচ