নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যম ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের একাধিক মন্ত্রী-উপদেষ্টাসহ যেসব ভিআইপি আন্দোলনের বিরুদ্ধে নানাভাবে উসকানি দিয়েছিলেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এসব নেতারা বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। আজ শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত কমিশনার’স মিট দ্য প্রেসে—সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান এ কথা জানান।
কতজন ভিআইপিকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, জিজ্ঞাসাবাদে আপনারা কী জানতে পেরেছেন?—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সাম্প্রতিক আন্দোলনের ইস্যুতে রুজু হওয়া মামলায় রিমান্ডে রয়েছেন। তাদের কেউ অর্থ, পরামর্শ ও বক্তৃতা কিংবা বিবৃতি দিয়ে উৎসাহিত করেছেন—এসব বিষয় এই মুহূর্তে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।’
ডিএমপির কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেছেন, ‘ইতিমধ্যে কিছু ভিআইপিকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে আনা হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে যারা অর্থ, পরামর্শ ও বক্তৃতা কিংবা বিবৃতি দিয়ে উৎসাহিত করেছেন এসব বিষয় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
কিছু অপেশাদার পুলিশ কর্মকর্তাদের কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সে সব পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি—এমন প্রশ্নের জবাবে মো. মাইনুল হাসান বলেন, ‘ইতিমধ্যে কিছু পুলিশের নামে মামলা রুজু হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা একটি চলমান প্রক্রিয়া। তুলনামূলক সময় লাগতে পারে।
যেসব অপেশাদার পুলিশ সদস্যরা গ্রেপ্তার হয়নি তারা এখন পলাতক কি-না জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘তাদের বিষয়ে এখনো আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত নেই।’
বিশেষ কয়েকটি জেলার পুলিশ সদস্যরা ডিএমপিতে গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে ছিলেন। আপনার দায়িত্ব পালনকালে এসব বিশেষ জেলার কর্মকর্তাদের পদায়ন হবে কি-না—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে একমত নয়। পুলিশ বাহিনীর সবাই পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করবে। কে কোন জেলা থেকে এল সেটি বিবেচনার বিষয় নয়। আমরা চাই একটি সুন্দর সুশৃঙ্খল পুলিশ বাহিনী তৈরি করতে। যেখানে সকল পুলিশ সদস্যের কাজ হবে পেশাদার।’
পুলিশে দুর্নীতি রোধে আপনি কী ব্যবস্থা নেবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই পেশাদার পুলিশ বাহিনী তৈরি হোক। যেখানে কোনো দুর্নীতি, অনিয়ম ও অন্যায়ের স্থান থাকবে না।’
পুলিশে আস্থার সংকট ফিরিয়ে আনার জন্য আপনারা কাজ করছেন, কিন্তু অপেশাদার পুলিশ সদস্যরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেছে তারা ডিএমপিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। কীভাবে আস্থার সংকট ফিরিয়ে আনবেন—জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। কিছুটা সময় লাগবে। তবে আপনারা পরিচ্ছন্ন পুলিশিং দেখতে পাবেন। যাদের আস্থার সংকট বলছেন তারা থাকবে না।’
আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়েছিল। সেসব অস্ত্রের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘অনেকের লাইসেন্সকৃত অস্ত্র যেমন ব্যবহার হয়েছিল আবার অবৈধ অস্ত্রও ব্যবহার হয়েছিল।’
আস্থা ও সংকট কাটিয়ে উঠতে কত দিন সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। আমরা চেষ্টা করছি ৷ এ ক্ষেত্রে সবার সাপোর্ট চাই আমরা। সবার সাপোর্ট ছাড়া ট্রমা থেকে পুলিশ উঠে আসতে পারবে না।’