শুক্রবার | ২৩ মে, ২০২৫ | ৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

১৫ বছর অপেক্ষার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে জয়

স্পোর্টস ডেস্ক: নাহিদ রানা মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। জাকের আলি ব্যাট হাতে গড়ে দেন ভিত। আর শেষটা করেন তাইজুল ইসলাম। মাঝে অবদান ছিল সবারই। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে তাতে স্বস্তির জয় পেয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ হয় ক্যারিবীয়ানে টেস্ট জয় পাওয়ার দীর্ঘ ১৫ বছরের অপেক্ষার।

কিংসটনে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০১ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে থামে ক্যারিবীয়রা। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬৮ রান করেছে বাংলাদেশ। ২৮৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৮৫ রানে অলআউট হয়েছে ক্যারিবীয়রা।

৫ উইকেটে ১৯৩ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করে বাংলাদেশ। আগের দিনটা তাদের জন্য কেটেছিল দুর্দান্ত। নাহিদ রানার ফাইফারের পর ব্যাটাররাও ভরসা যোগান। বাংলাদেশেরও জয়ের স্বপ্ন উঁকি দেয়।

শেষদিনে বাংলাদেশের জন্য ভরসা হয়ে থাকেন জাকের আলি অনিক। যদিও তার অন্য প্রান্তের ব্যাটাররা ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। শুরুটা হয় তাইজুল ইসলামকে দিয়ে। জাকেরের সঙ্গে তার ৯৫ বলে ৩৪ রানের জুটি ভাঙেন আলজারি জোসেফ। ৫০ বলে ১৪ রান করে তাইজুল ক্যাচ আউট হন।

আগের দিন অসুস্থতার কারণে ব্যাটিংয়ে আসেননি মুমিনুল হক। আটে খেলতে নেমে শূন্য রানে স্লিপে ক্যাচ দেন তিনি। তার বিদায়ের পরও বাংলাদেশের আশা হয়ে থাকেন জাকের। তিনি পেয়ে যান হাফ সেঞ্চুরিও।

৮০তম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের অর্ধশত পূরণ করেন তিনি। এর কিছুক্ষণ বাদে হাসান মাহমুদ আউট হন কেমার রোচের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে, ৬ বলে শূন্য রান করা তাসকিন তার বাউন্সার টেনে আনেন স্টাম্পে। উইকেট যত পড়েছে, ততই মারমুখী হয়েছেন জাকের।

একসময় তিনি পৌঁছে যান ‘নার্ভাস নাইন্টিজে’। যদিও সেঞ্চুরি আর পাওয়া হয়নি তার। ৯১ রানে থাকতে আলজারি জোসেফের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হয়ে যান জাকের, তবে তার ইনিংসটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে অনেকদিন। জাকেরের বিদায়ের পর বাংলাদেশও অলআউট হয়ে যায়। তবে রানটা ততক্ষণে পৌঁছে গেছে বেশ ভালো জায়গায়।

রান তাড়ায় নেমে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে পাঁচ ওভারের ভেতরই প্রথম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দারুণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে তাইজুলকে তখন বোলিংয়ে নিয়ে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি এসেই মিকাইল লুইসকে আউট করেন, এই ব্যাটার ক্যাচ দেন শর্ট লেগে শাহাদাৎ হোসেন দীপুর হাতে।

এক উইকেট না হারিয়ে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যাওয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফেরার পর থিতু হওয়ার চেষ্টা করছিল। কার্লোস ব্র্যাথওয়েট নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সামনে থেকে। তবে কেসি কার্টিকে এর মধ্যে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান তাসকিন, তখন তার রান ১৪।

ক্যারিবীয়দের হয়ে প্রতিরোধ গড়া কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে ফিরিয়ে দেন তাইজুল ইসলাম। তার বলে স্লিপে দাঁড়ানো জয়ের হাতে ক্যাচ দেন ৬৩ বলে ৪৩ রান করা এই ব্যাটার। নিজের পরের ওভারে এসেও উইকেট পান তাইজুল।

এবার তিনি ফেরান অ্যাথানজেকে। ৬ বলে ৫ রান করে এই ব্যাটার হন বোল্ড। চা বিরতি থেকে ফেরার পর কেভম হজকে ফিরিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট পান তাইজুল। ক্যারিবীয়দের হয়ে ৭৫ বল খেলে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন হজ।

মাঝে তাসকিনের একটি উইকেটের পর তাইজুল নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন জশুয়া দি সিলভাকে ফিরিয়ে। নিজের ক্যারিয়ারে ১৫তম বারের মতো এই মাইলফলকে পৌঁছান তিনি।

এরপর বাকি তিন উইকেট তুলে জয়টা পেতে খুব একটা দেরি করেনি বাংলাদেশ। এই জয় অনেকটা স্বস্তির বাংলাদেশের জন্য। ২০০৯ সালের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে আবার টেস্ট জিতলো বাংলাদেশ, সবমিলিয়ে ৬ বছর পর। মেহেদী হাসান মিরাজও পেয়েছেন অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ।

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM