নিজস্ব প্রতিবেদক: স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় উচ্চ আদালতের দেওয়া জামিন বহাল থাকায় কারামুক্ত হয়েছেন সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। সাড়ে ৩ বছর পর বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে বহনকারী একটি প্রাইভেটকার কারা ফটক দিয়ে বেরিয়ে যায়।
বাবুল আক্তারের আইনজীবী কফিল উদ্দিন বলেন, বাবুল আক্তারের জামিন বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত। ফলে আজ তিনি মুক্তি পেয়েছেন।
এর আগে, একইদিন বাবুল আক্তারকে উচ্চ আদালতের দেওয়া জামিন বহাল রেখে আদেশ দিয়েছেন চেম্বার আদালত। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মোহাম্মদ রেজাউল হকের আদালত এ আদেশ দেন। এরপরই তার কারামুক্তিতে বাধা কেটে যায়।
গত ২৭ নভেম্বর বিচারপতি মোহাম্মদ আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিনের আদেশ দিয়েছিলেন। এরপর রোববার (১ ডিসেম্বর) কারামুক্ত হওয়ার কথা ছিল বাবুল আক্তারের। এজন্য আদালত থেকে জামিনের বেইল বন্ডও পাঠানো হয়েছিল কারাগারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুক্তি মেলেনি। একইদিন জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।
গত ১৪ আগস্ট চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের আদালতে জামিন আবেদন করেছিলেন বাবুল আক্তার। ১৮ আগস্ট জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত। পরে তিনি উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরের জিইসি মোড়ের কাছে ওআর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে গুলি ও ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ঐ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন তার স্বামী তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার।
মামলাটি তদন্ত করছিল নগর ডিবি পুলিশ। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ‘আদালতের নির্দেশে’ মামলার তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপরই ঘুরতে থাকে মামলার গতিপ্রকৃতি। পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসতে থাকে স্ত্রী হত্যার সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার নানা দিক।
২০২১ সালের ১০ মে মামলার বাদী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুল আক্তারকে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ে ডেকে নেয়া হয়। এরপরই তাকে হেফাজতে নেয় পিবিআই। পরে ১২ মে দুপুরে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে নগরের পাঁচলাইশ থানায় আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।
তদন্ত শেষে ঐ মামলায় বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে দুই হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। এরপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলাটিতে প্রথম সাক্ষ্য দেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।
বাবুল আক্তারের সঙ্গে অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা, মোহাম্মদ মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম ওরফে কালু ও শাহজাহান মিয়া। তাদের মধ্যে বাবুল, ওয়াসিম, শাহজাহান ও আনোয়ার কারাগারে আছেন। এহতেশামুল জামিনে, কামরুল শিকদার মুসা ও খাইরুল ইসলাম কালু শুরু থেকে পলাতক।