নিজস্ব প্রতিবেদক: সচিবালয়ে ঢুকে ৭ নম্বর ভবনের চারপাশে জানালার ভাঙা গ্লাস ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে। আগুনে ভবনের ছয় থেকে আটতলা পুড়েছে। চারদিকে ফায়ার সার্ভিসের ছিটানো পানি। কয়েকটি কবুতর মরে পড়ে আছে। ভবনের ভেতরে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৫০ মিনিটে ভবনটিতে আগুন লাগে। ছয় ঘণ্টা পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।
দেখা যায়, ৭ নম্বর ভবনে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় রয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। আগুনে মূলত ছয়, সাত ও আটতলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভবনের সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, তিনি ধারণা করছেন, বাজেটের এক্সেল শিটগুলো ফিরে পাওয়া কঠিন হবে। দফতরে তার ব্যক্তিগত সার্টিফিকেট ছিল, তা আর ফিরে পাবেন না তিনি। প্রশাসন শাখার গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ধ্বংস হয়ে গেছে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
সচিবালয়ে কর্মরত এক কর্মচারী তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোনে বলছিলেন, ‘স্যার, সব শেষ হয়ে গেল।’
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দেরি হওয়ার কারণ কী-
এদিকে আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পদে পদে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়েছে। সচিবালয়ের ফটক দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভেতরে ঢোকাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলেন, আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের দুটি টার্নটেবল লেডার (টিটিএল) ভেতরে ঢুকতে পেরেছে। যদি আরো বেশি টিটিএল ঢুকতে পারত, তাহলে আরো আগে আগুন নেভানো সম্ভব হতো।
সচিবালয়ে ঢোকার মোট ফটক পাঁচটি। তবে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢোকার ফটক আছে মাত্র দুটি। এই দুই ফটক দিয়েও ফায়ার সার্ভিসের বড় গাড়ি ঢুকতে সমস্যা হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা। তারা বলেন, সচিবালয়ের ৪ নম্বর ফটক দিয়ে ঢুকতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি ভেঙে গেছে।
আগুন নেভানোর কাজ শেষে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সচিবালয় থেকে বের করতেও বেশ সমস্যা হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা। গাড়ি বের করতে গিয়ে দেয়ালের কয়েকটি জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেন, আগুন ছড়িয়ে পড়ার একটি বড় কারণ হলো, মন্ত্রণালয়গুলো কাঠ দিয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেছে। এটি যখন করা হয়, তখন নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু কাঠ দিয়েই সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হয়। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি রুম ছিল বন্ধ। তালা ভেঙে, জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকতে হয়েছে।
আগুন নেভানোর কাজে জড়িত ফায়ার সার্ভিসের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, অভিযান পরিচালনা করতে তাদের বেশ সমস্যা হয়েছে। যে কারণে আগুন নেভাতে সময় লেগেছে।