শুক্রবার | ৯ মে, ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ, ১৪৩২

রাজনীতিতে ট্রুডোর উত্থান-পতন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নিজ দলের চাপের মুখে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (৬ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।

গত নয় বছর ধরে ট্রুডো কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু এখন লিবারেল পার্টির মধ্যেই ট্রুডোর বিরুদ্ধে অসন্তোষ। তার দলের অনেক পার্লামেন্ট সদস্য ও নেতা প্রকাশ্যে ট্রুডোকে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন।

সোমবার ট্রুডো বলেছেন, “দল নতুন নেতা নির্বাচনের পরই আমি পদত্যাগ করবো।” তাকে সরিয়ে নতুন নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্যও তিনি দলকে নির্দেশ দিয়েছেন। পার্লামেন্টের পরের অধিবেশন ২৪ মার্চের পরেই হবে এবং দল নতুন নির্বাচন করা পর্যন্ত ট্রুডোই প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।

উল্লেখ্য ২০১৩ সাল ট্রুডোই দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং ২০১৫ সাল থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তিনিই কানাডার সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে প্রধানমন্ত্রী পদে আছেন।

কেন ট্রুডো ইস্তফা দিচ্ছেন?

দলের পার্লামেন্ট সদস্যরাই চাইছিলেন ট্রুডো ইস্তফা দিক। জনমত সমীক্ষায় বলা হচ্ছিল, এই বছরের শেষে যে নির্বাচন হওয়ার কথা আছে, তাতে লিবারেল পার্টি খুব খারাপ ফল করবে।

ট্রুডো বলেছেন, আমার কাছে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে, আমাকে যদি দলে অভ্যন্তরীণ লড়াই লড়তে হয়, তাহলে আগামী নির্বাচনে লড়ার জন্য আমি সেরা বিকল্প হতে পারি না। দেশকে তাদের সেরা নেতা নির্বাচনের একটা সুযোগ দেওয়া দরকার।

পরপর দুই বার তার নেতৃত্বে দল নির্বাচনে জিতেছে। মানুষ তাকে দেখে ভোট দিয়েছে। কিন্তু গত দুই বছর ধরে তার জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়া ও আবাসন সংকটই তার প্রধান কারণ।

২০০৯ থেকে ট্রুডো সংখ্যালঘু সরকার চালাচ্ছেন। ট্রুডো বলেছেন, “আমার দল ও দেশের জন্য আমি লড়াই করতে ভয় পাই না। কানাডার মানুষের স্বার্থে, দেশ, দল ও গণতন্ত্রের স্বার্থে লড়াই করাটা আমার পছন্দের।”

গত ডিসেম্বরে অর্থমন্ত্রী ও তার অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড আর্থিক নীতি নিয়ে মতপার্থক্যের জেরে ইস্তফা দেন। এই নিয়ে সোমবারও ট্রুডো কিছু বলতে চাননি। তবে এই ঘটনা তার অস্বস্তি বাড়িয়েছে।

এরপর কী হবে?

সোমবার ট্রুডো যে ঘোষণা দিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট, আগামী ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার নেবেন, তখন তিনি ক্ষমতায় থাকবেন। ট্রাম্প কানাডার বিরুদ্ধে মাসুল বসানোর হুমকি দিয়েছেন, যা করা হলে কানাডার অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে পড়তে পারে।

ট্রুডোর পর মার্ক কারনি লিবারেল পার্টিকে নেতৃত্ব দিতে পারেন। তিনি এরই মধ্যেই ট্রুডোকে তার সিদ্ধান্তের জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন। বিরোধী রক্ষণশীলরা পরের নির্বাচনে জিততে পারে বলে জনমত সমীক্ষায় বলা হচ্ছে। তারা যদি জেতে তাদের নেতা পিয়ার পলিয়েভর কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন।

ট্রুডো বলেছেন, বিরোধী নেতার ভিশনের সঙ্গে তিনি একমত নন। আর পলিয়েভর জানিয়েছেন, লিবারেল পার্টির নেতা যিনিই হোন না কেন, তার সঙ্গে টক্কর নিতে তিনি প্রস্তুত।

হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া-

ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণার পর হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় এক দশক ধরে তিনি কানাডার সরকারকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সব বিষয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই অংশীদারিত্বের জন্য ট্রুডোর প্রতি কৃতজ্ঞ।

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM