কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থানের মুখে কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীনের বদলি আদেশ বাতিল করে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
আজ মঙ্গলবার মাউশির সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক–২) দুর্গা রানী শিকদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
পৃথক এক পত্রে প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীনের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপকর্মের অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে মাউশি। এর জন্য অধিদপ্তরের একজন উপপরিচালক ও একজন সহকারী পরিচালকের সমন্বয়ে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে সরেজমিন তদন্ত করে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ আগস্ট অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীন বলেছিলেন, ‘আমি পদত্যাগ করব না। যদি সুইসাইড (আত্মহত্যা) করতে হয় তা-ও আমি পদত্যাগ করব না। কোনো স্টুডেন্ট পদত্যাগ করাতে পারে না। একটা আইন আছে, সরকারি স্কুলের একটা প্রসিডিউর আছে। তবে আমি কুড়িগ্রামে এক সেকেন্ডও থাকতে চাই না। কিন্তু আমি জীবন থাকতে সাইন করব না।’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীনকে তাঁর নিজ জেলা লালমনিরহাটে বদলির আদেশ দেয় মাউশি। তবে এমন বদলিকে ‘পুরস্কার’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনকারীরা। তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থানের মুখে সিদ্ধান্ত বদলাল মাউশি।
‘প্রয়োজনে আত্মহত্যা করব, তবু পদত্যাগ করব না’‘প্রয়োজনে আত্মহত্যা করব, তবু পদত্যাগ করব না’
প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীনের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, স্বৈরাচারী আচরণ এবং দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা অভিযোগ তুলে তাঁকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ ও চাকরিচ্যুতির দাবিতে আন্দোলনে নামে স্কুলটির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি, সড়ক অবরোধসহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা রুখসানা পারভীনকে বরখাস্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তের দাবি জানায়। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়গুলো মন্ত্রণালয়কে লিখিত ভাবে জানায় জেলা প্রশাসন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীনকে ওএসডি ও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিল মাউশি।