বুধবার | ৪ জুন, ২০২৫ | ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

চিফ ইঞ্জিনিয়ারের স্টাফ অফিসার মাহফুজের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ গণপূর্তের প্রকৌশলীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর স্টাফ অফিসার মাহফুজুল আলমের চাঁদাবাজি অতিষ্ঠ গণপূর্ত অধিদপ্তরের সর্বস্তরের প্রকৌশলী ও কর্মকর্তারা। তারা অভিযোগ করেছেন, প্রায় প্রতি মাসেই ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের সবগুলো ডিভিশন থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন তিনি। প্রধান প্রকৌশলীর বিভিন্ন কাজে এ টাকা আদায়ের কথা বলা হলেও সিংহভাগই তিনি আত্মসাত করেন। আর এ কারনে এই পদ থেকে তাকে বদলি করা হলেও তিনি এখান থেকে সরতে নারাজ।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামিম আকতারের আস্থাভাজন অফিসার মোহাম্মদ মাহফুজুল আলম বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রভাবশালী এক মন্ত্রীর তদ্বিরে স্বাস্থ্য উইংয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে প্রধান প্রকৌশলীর স্টাফ অফিসার হিসেবে বদলি হয়ে আসেন। এখানে আসার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ ওঠে। গণপূর্তের ঠিকাদার সিন্ডিকেটের আস্থাভাজন মাহফুজ প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারের সততার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।

মাহফুজ আলম দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঠিকাদার ও তদবিরবাজদের এমন একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন যা অতিক্রম করে কেউ প্রধান প্রকৌশলীর কাছে পৌঁছাতে পারেন না।  তার সিন্ডিকেটের বাইরের কোন ব্যক্তিকে প্রধান প্রকৌশলীর সাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পর্যন্ত পাননা। ফলে সবাই মাহফুজকে ম্যানেজ করেই চলেন। ৫ আগস্টের পর গণপূর্তের শুদ্ধি অভিযানে তাকে অন্যত্র বদলি করে তার স্থানে মেডিকেল ডিভিশনের আজমুলকে পোস্টিং দেয়া হলেও মাহফুজ তার পদ আগলে রেখেছেন।

সারাদেশের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছ থেকে উন্নয়ন বাজেটের ১ পার্সেন্ট এবং সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ বাজেটের ৩ পার্সেন্ট কমিশন আদায় করেন এই মাহফুজ। বিভিন্ন ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন এই মাহফুজ। শুধুমাত্র পাবলিক লাইব্রেরীর একটি টেন্ডার থেকে প্রতিযোগিতামূলক দরের চেয়ে ১৭ শতাংশ বেশি দরে টেন্ডার পাইয়ে দিয়ে ১১ কোটি টাকা নিয়েছেন খোদ মাহফুজ নিজে। তৎকালীন সচিব শহীদুল্লাহ খন্দকারের নামে নেয়া টাকাও তিনি দেননি।

বদলি পদোন্নতির ক্ষেত্রেও কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে এই মাহফুজের বিরুদ্ধে। এক একটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীদের বদলীর ক্ষেত্রে ৫০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন এই মাহফুজ। অথচ প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার কোনো টাকাই নেন না। সম্প্রতি শেরেবাংলানগর-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী পদে নিজের বন্ধু  লতিফকে বসিয়ে নগদ ৫০ লাখ টাকা নেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে তিনি তাঁর কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে তিনি মেট্টোপলিটান জোনের এক কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন। বলেছেন, সম্প্রতি ২ লাখ টাকা চাঁদার জন্য মাহফুজ তাকে অস্থির করে ফেলেছেন।

এসব বিষয়ে মাহফুজুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রধান প্রকৌশলীর রুমে রয়েছেন বলে লাইন কেটে দেন। পরে জানান, এখানে তিনি আর থাকতে চাচ্ছেন না। কাজের কোনো পরিবেশ নেই।

 

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM