রবিবার | ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৩ ফাল্গুন, ১৪৩১

মানুষখেকো নেকড়ের হানায় সাত জনের মৃত্যু, ড্রোন উড়িয়ে চলছে তল্লাশী

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: ভারতের উত্তরপ্রদেশের তরাই অঞ্চলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মানুষখেকো নেকড়ের দল! অভিযোগ, গত দেড় মাসে তাদের শিকার হয়েছে ছ’টি শিশু-সহ সাত জন। জখম ২২ জন। বাহারআইচ জেলার মাহসি ব্লকের সিসিয়া পঞ্চায়েত এবং আশপাশের অঞ্চলগুলিতেই মূলত ঘটছে নেকড়ের হানার ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই দলে মোট তিনটি নেকড়ে রয়েছে। তাদের সন্ধানে ইতিমধ্যেই ২২টি দল গড়েছে উত্তরপ্রদেশ বন দফতর। বনকর্মীদের পাশাপাশি সেই দলে আছেন নিশানায় দক্ষ শিকারি এবং বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞেরা। রয়েছে ড্রোন, নাইট ভিশন্‌স-সহ নানা আধুনিক সরঞ্জাম। যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বনমন্ত্রী অরুণকুমার সাক্সেনা বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে জানিয়েছেন, নেকড়ের দলকে কবজায় আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
বাহারআইচ জেলার নেপাল সীমান্তবর্তী কাটার্নিয়াঘাট ব্যাঘ্রপ্রকল্পের বাফার জ়োনে নেকড়ের উপস্থিতি রয়েছে। প্রাথমিক অনুমান, ওই তিনটি নেকড়ে সেখান থেকেই লোকালয়ে এসে ডেরা বেঁধেছে। একদা নরেন্দ্র মোদী সরকারের ‘ন্যাশনাল চিতা অ্যাকশন প্ল্যান’ (জাতীয় চিতা পুনঃস্থাপন কর্মসূচি)-এর প্রধান তথা বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ যাদবেন্দ্রনাথ ঝালা অবশ্য বাহারআইচের ঘটনার জন্য নেকড়ের দল দায়ী কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘নেকড়েরা সাধারণ ভাবে লাজুক প্রাণী। মানুষকে আক্রমণের নজির খুবই কম।’’ অতীতে কাটার্নিয়াঘাট লাগোয়া জঙ্গলে বাঘ এবং চিতাবাঘের হামলায় মানুষের মৃত্যুর ঘটনার অনেক নজির আছে বলেও জানান তিনি।
সদলবদলে জঙ্গলে ঢুকে, ড্রোন উড়িয়ে মানুষখেকোর নাগাল আদৌ পাওয়া সম্ভব কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বন-বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের একাংশ মানছেন, জঙ্গলে ড্রোন ওড়ানোর হাজারটা হ্যাপা। ড্রোন ওড়াতে তুলনায় পাতলা জঙ্গল বাছতে হয়। কিন্তু মাঝ বর্ষায় পুরো এলাকাই ঘন সবুজে ঢাকা। ফলে মানুষখেকো বাঘ বা চিতাবাঘ সেখানে সেখানে ঘাপটি মেরে থাকলে সন্ধান পাওয়া কঠিন। ১৯৭২ সালের ভারতীয় বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ধূসর নেকড়ে ১ নম্বর তফসিল অর্থাৎ সর্বোচ্চ গুরুত্বে সংরক্ষিত প্রজাতি। সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতে তাদের আনুমানিক সংখ্যা তিন হাজারেরও কম।

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM