সোমবার | ১২ মে, ২০২৫ | ২৯ বৈশাখ, ১৪৩২

গাজায় শিশুদের পোলিও টিকাদান কর্মসূচি শুরু আজ

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ পোলিও সংক্রমণ। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় শিশুদের মধ্যে পোলিও টিকা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে এ টিকা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা গাজার ছয় লাখ ৪০ হাজার শিশুর বিরুদ্ধে উচ্চাভিলাষী পোলিও টিকা ক্যাম্পেইন শুরু করতে যাচ্ছেন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির মধ্যে প্রথম ধাপে রোববার থেকে এ কর্মসূচি শুরু হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, স্বল্প সময়ের মধ্যে গাজায় থাকা ১০ বছরের কম বয়সী অন্তত ৯০ শতাংশ শিশুকে টিকার আওতায় আনতে হবে।

গাজায় দীর্ঘ ২৫ বছরের মধ্যে প্রথম কোনো পোলিও রোগী শনাক্ত হয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগটি গাজার আরও অনেক শিশুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর ফলে এটি মোকাবিলা না করা গেলে পোলিওর আঞ্চলিক প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।

এর আগে ফিলিস্তিনের রামাল্লার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, চিকিৎসকরা গাজার ১০ মাস বয়সী এক শিশুর শরীরে পোলিওর উপসর্গ শনাক্ত করেছেন। জর্ডানের রাজধানী আম্মানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগটি ধরা পড়েছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজার বর্জ্য পানি থেকে সংগ্রহ করা নমুনায় গত জুনে টাইপ-২ পোলিও ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। জাতিসংঘ মহাসচিব উপত্যকার ছয় লাখ ৪০ হাজারের বেশি শিশুকে সাত দিন করে দুই দফার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। এরপরই পোলিও সংক্রমণের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও প্রথম ধাপে তিন দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল।

শুক্রবার ফিলিস্তিনের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তা রিক পিপারকর্ন বলেন, রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) থেকে গাজায় পোলিওর টিকা দেওয়া শুরু হবে। এ তিন দিন স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত সময়ে যুদ্ধ বন্ধ থাকবে। এ সময়েই টিকা দেওয়া হবে।

গাজায় পয়োব্যবস্থার অভাব, স্বাস্থ্যসেবায় প্রতিবন্ধকতা ও টিকা সংকটে পোলিওর ভয়াবহ সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনকি এটি ইসরায়েলেও ছড়াতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। দেশটির এ হামলার জবাবে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে এ যুদ্ধ শুরু হয়। ক্রমেই তীব্র থেকে তীব্রতর রূপ নেয় যুদ্ধ। এরপর থেকে গাজার ওপর বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এমনকি তাদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদসহ ধর্মীয় স্থাপনাও।

সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার ২০ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। দেশটির হামলার কারণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইসরায়েলে হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন গাজার ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি আর ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা। এ ছাড়া ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক আদালতে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে দেশটি।

আইএফ

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM