নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ৩ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম না বাড়ানোর দাবিও জানিয়েছে ক্যাব। এছাড়াও আরো ১০টি দাবি জানান ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা এই সংগঠনটির নেতারা।
ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ খাতে খরচ প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। যার সিংহভাগই গেছে আওয়ামী লীগ সরকার ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন কোম্পানির ভাণ্ডারে। প্রতিযোগিতা এড়িয়ে, যেমন খুশি তেমন দামে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিক্রির মাধ্যমে লুটপাট হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব এসব অভিযোগ করেছে।
ক্যাবের দাবি, কেবল ২০২২ সালেই বিদ্যুৎ খাতে লোপাট হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
পাশাপাশি বেসরকারি খাতে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি সামিট পাওয়ার ও ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ রোববার (১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী হলে ক্যাব আয়োজিত ‘লুণ্ঠন প্রতিরোধে জ্বালানি খাত সংস্কার চাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম. শামসুল আলম।
তিনি বলেন, ”শুধু ২০২২ সালেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩৫ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। যা আমাদের এক অনুসন্ধানী গবেষণায় পাওয়া গেছে। বিগত ১৫ বছরে ঠিক কত টাকা– এই খাতে লুটপাট হয়েছে তা জানার জন্য সরকারের অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন।”
শামসুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ, প্রাথমিক জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহের যেকোনো পর্যায়ের দুর্নীতি ও লুণ্ঠনে জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ, এবং ‘জ্বালানি অপরাধী’ হিসেবে তাদের বিচার চাই।
আগামী ৩ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম না বাড়ানোর দাবিও জানিয়েছে ক্যাব। এছাড়াও আরো ১০টি দাবি জানান ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা এই সংগঠনটির নেতারা।
তিনি বলেন, ভোক্তা যেন সঠিক দাম, মাপ ও মানে বিদ্যুৎ, প্রাথমিক জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সেবা পায় এবং লুণ্ঠনের শিকার না হয়, সেজন্য জ্বালানি সরবরাহের সকল পর্যায়ে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা, সমতা, যৌক্তিকতা ও জবাবদিহিতা তথা জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত করতেই এসব দাবি জানানো হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
তাদের দাবিগুলো হলো– অন্যায় ও অযৌক্তিক ব্যয় রোধ করে ঘাটতি সমন্বয়, পণ্য মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধ এবং সংকট মোকাবিলা করার লক্ষ্যে ৩ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানির মূল্যহার বৃদ্ধি না করা।
সেই লক্ষ্যে বিইআরসির আওতায় ক্যাব প্রস্তাবিত বাংলাদেশ জ্বালানি রূপান্তর নীতি ২০২৪-এর আলোকে জ্বালানি খাত সংস্কার প্রস্তাব প্রণয়নের জন্য একটি ‘জ্বালানি খাত সংস্কার কমিশন’গঠন, লুণ্ঠনমূলক ব্যয় রোধ করে ঘাটতি সমন্বয় এবং ভোক্তার জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন।