নিজস্ব প্রতিবেদ: সচিবালয়ের সামনে সাধারণ আনসার সদস্যদের হামলার ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন শাহিন হাওলাদার (৪৫) মারা গেছেন। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মারা যান তিনি। পেশায় রেন্ট-এ কারের গাড়ি চালক ছিলেন শাহিন।
গত ২৫ আগস্ট রাতে আনসারদের হামলায় আহত হয়ে ঢামেকে ভর্তি হয়েছিলেন শাহিন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার কচুবুনিয়া গ্রামে। বাবার নাম সোবহান হাওলাদার। জীবিকার তাগিদে পরিবারসহ রাজধানীর খিলগাঁও গোড়ান এলাকার ৩০ নম্বর রোডে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে বাবার লাশ নিতে আসেন নিহত শাহিনের ছেলে বিশাল আহমেদ। তিনি বলেন, বন্ধুদের নিয়ে আমরা ছাত্র আন্দোলনের প্রথম থেকেই রাজপথে ছিলাম।
গত ২৫ আগস্ট সাধারণ আনসার সদস্যরা যখন সচিবালয় ঘেরাও করেন, সেদিন রাতে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে উপস্থিত হলে তাদের ওপর হামলা করে আনসাররা। ওই সময় আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে সচিবালয়ের সামনে গিয়েছিলাম। একপর্যায়ে রাত ৯টার দিকে সচিবালয়ের দুই পাশে আনসার সদস্যরা অবস্থান নিলে আমরা মাঝখানে আটকা পড়ি। পরে সেখান থেকে বের হতে বাবাকে ফোন দেই।
বিশাল আহমেদ জানান, বাবা ফোন পেয়ে সচিবালয়ের সামনে দিয়ে হেঁটে খুঁজছিলেন আমাদের। তখন আনসার সদস্যরা লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে বাবাকে। অনেকক্ষণ পর বাবার ফোনে কল করলে তখন এক শিক্ষার্থী ফোন রিসিভ করে জানান, আনসার সদস্যরা বাবাকে আঘাত করেছে। সঙ্গে সঙ্গে বাবার কাছে গিয়ে তাকে আহত অবস্থায় ওই রাতেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার মাথায় অস্ত্রোপচার হয়। সেই সঙ্গে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় আজ সকালে মারা যান।
বিশালের বন্ধু রমজান হাওলাদার বলেন, আমার বন্ধুর বাবা মূলত আমাদের সেদিন সচিবালয়ের সামনে থেকে আনার জন্য গিয়েছিলেন। তবে সেখানে আমাদের খুঁজে পাচ্ছিলেন না। ওই সময় আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থী মনে করে তাকেও পিটিয়ে আহত করে। তাকে পেটানোর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওর মধ্যেও তাকে মারধর করতে দেখা গেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সানাউল হক জানান, পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে শাহিন হাওলাদের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এমএফ