বুধবার | ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মণিপুরে নিহত ২, অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহারে উদ্বিগ্ন ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন করে সহিংসতায় কুকি-জো সম্প্রদায়ের একজন নারী এবং একজন সাবেক সৈনিক নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা সোমবার জানিয়েছেন। নিহত ওই নারীর নাম নেজাহোই লুংডিম এবং সাবেক ওই সৈন্যের নাম লিমখোলাল মেট। তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর আসাম রেজিমেন্টের সাবেক হাবিলদার।

এদিকে উত্তপ্ত মণিপুরে গুলি বিনিময়, বোমা বিস্ফোরণ, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা, বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু, মণিপুর রাইফেলসের দুটি ব্যাটেলিয়নের অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্রশস্ত্র লুটের চেষ্টাসহ একাধিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্বিগ্ন ভারত।

সেখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। সেটা কারা জোগান দিচ্ছে সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অবস্থা সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও যৌথ বাহিনী।

এদিকে, শান্তি ফেরানোর ক্ষেত্রে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদে নেমেছেন বহু মানুষ। রোববার রাতে বিপুল সংখ্যক নারী ইম্ফলে রাস্তায় নামেন। রাজ্যে শান্তি ফেরানোর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন তারা।

এ আবহে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মণিপুরের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য প্রশাসন সচেষ্ট। সাম্প্রতিক সহিংস সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের পাশে রয়েছে তার রাজ্যের বিজেপি সরকার। নিহত এক ব্যক্তির পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণের টাকাও তুলে দেন তিনি।

মণিপুর পুলিশের কর্মকর্তা কে খাবিব (আইজিপি, ইন্টেলিজেন্স) বলেন, রাজ্যে সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাগুলির কারণে, মণিপুর পুলিশ যৌথ বাহিনীর সঙ্গে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জেলা সদরে রয়েছেন এবং পরিস্থিতি মনিটর করছেন।

ড্রোনের সাহায্যে হামলা চালানো হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের সন্দেহ হামলাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত। তারপর থেকে রাজ্যের একাধিক জায়গায় হামলা হয়েছে এবং কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশের সঙ্গেও কুকি সম্প্রদায়ের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের সংঘর্ষ হয়েছে বলে অভিযোগ।

দিল্লির মেইতেই আহ্বায়ক কমিটির সেরাম রোজেশ বিবিসি বাংলাকে বলেন, মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি কিন্তু খুবই উদ্বেগজনক। আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হস্তক্ষেপ করার জন্য। মেইতেই গোষ্ঠীর মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে আক্রমণের জন্য যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা কারা জোগান দিচ্ছে সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

কুকি সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা কর্মরত সংগঠনের পক্ষ থেকে হাতজালহই হাওকিপ বলেন, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মণিপুরে কুকি গোষ্ঠীর মানুষের ওপর যে অত্যাচার চলছে সে বিষয়ে রাষ্ট্র নীরব রয়েছে। আমরা দিল্লিতে কেন্দ্র সরকারকে আমাদের পরিস্থিতির কথা জানিয়েছি। কিন্তু কিছুই হয়নি। এই মুহূর্তে মণিপুরে যা হচ্ছে তা খুবই চিন্তার। কুকিদের ওপর অত্যাচার চলছে এখনো। কিন্তু কেউ কিছু বলছে না।

ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ভুয়া পোস্টকে ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ।

খাবিব বলেন, আমি জনসাধারণকে অনুরোধ করব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা দেখছেন তার ভিত্তিতে বিশ্বাস করবেন না। গুঞ্জনে কান দেবেন না। যদি কিছু চোখে পড়ে এবং সেই সম্পর্কে কিছু জানতে চান তাহলে আমাদের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করুন বা সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং সেলে যোগাযোগ করুন। এআরএস

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- Payra Team