নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক গৃহবধূ। আজ বুধবার দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একে একে পাঁচটি নবজাতকের জন্ম দেন তিনি। পাঁচ নবজাতক ও মা সবাই সুস্থ আছেন।
বাচ্চাগুলোর বাবার নাম আবদুল মজিদ (৪০)। মায়ের নাম মেরিনা খাতুন (৩৫)। বাড়ি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে। আবদুল মজিদ বর্তমানে মালয়েশিয়াপ্রবাসী। ইতিমধ্যে তাঁকে ফোন করে সন্তানদের খবর দেওয়া হয়েছে। ওই নারীর আরও দুটি মেয়ে আছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তির পর অস্ত্রোপচার করে বাচ্চাগুলোর জন্ম হয়। বাচ্চাগুলোর মধ্যে দুটি ১ কেজি ২০০ গ্রাম, দুটি ১ কেজি ৩০০ গ্রাম এবং ১টির ওজন ১ কেজি।
পরিবারের পক্ষ থেকে হাসপাতালে তাদের তদারক করছিলেন গৃহবধূর মামাশ্বশুর নয়ন বাবু। তিনি বলেন, তাঁরা আগে থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সন্তান হবে বলে জানতেন। এ জন্য মেরিনাকে দেখেশুনে রাখতে আগে থেকেই পাঁচ নারীকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। মেরিনাও বরাবরই সুস্থ ছিলেন। খাওয়াদাওয়া করেছেন, ঘুরে বেড়িয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার প্রসববেদনা ওঠার পর তাঁর অবস্থা খারাপ হয়ে গেলে তাঁকে রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
নয়ন বলেন, গতকাল রাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ বেলা ১১টার দিকে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। এরপর একে একে পাঁচটি ছেলেশিশুর জন্ম হয়। তিনি বলেন, খবর পাওয়ার পর বাড়ি থেকে আত্মীয়স্বজন মিলে অন্তত ১৫ জন মেয়ে এসেছেন। তাঁরাই বাচ্চাগুলো নিয়ে ছোটাছুটি করছেন।
বিকেল চারটার দিকে হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বাচ্চাগুলোকে একনজর দেখতে মানুষ ভিড় করছেন। পাঁচজন নারীর হাতে পাঁচটি স্যালাইনের পাইপ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একেকটি বাচ্চার শরীরে স্যালাইন পুশ করে তাঁদের কোলে তুলে দেওয়া হয়। পাশের কক্ষে পাঁচ নবজাতকের জন্য একটি আলাদা বিছানা প্রস্তুত করা হয়। সেখানে ক্রমিক নম্বর অনুযায়ী বাচ্চাদের শুইয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে অন্য রোগীর স্বজনেরা বাচ্চাগুলোকে দেখতে ভিড় করেন। একজন নার্স চিৎকার করে তাঁদের সরিয়ে দেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের প্রধান রোকেয়া খাতুন বলেন, তাঁর অধীনই ওই প্রসূতি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর উচ্চ রক্তচাপ ও থাইরয়েডের সমস্যা ছিল। এ জন্য তাঁকে সিজারিয়ান অপারেশন করতে হয়েছে। বাচ্চাদের মধ্যে দুটি ১ কেজি ২০০ গ্রামের, দুটি ১ কেজি ৩০০ গ্রামের আর ১টি ১ কেজি ওজনের। ছোট বাচ্চাটি একটু দেরিতে কেঁদেছে। বড় দুটি একেবারে স্বাভাবিক। সঙ্গে সঙ্গে কান্না করেছে। তাঁরা পাঁচটি বাচ্চাকেই সুস্থ মনে করছেন। তাদের মা-ও বর্তমানে সুস্থ আছেন।