আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকে ন্যাটো সদস্য হয়েও রাশিয়ার পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছিল তুরস্ক। তবে এবার হয়তো সে পাশার দান উল্টাতে শুরু করেছে। যুদ্ধে ইউক্রেন বাহিনীর রুশ ভূখণ্ডে প্রবেশ ও রাশিয়ার মাটিতে পশ্চিমা দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অনুমতি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই এবার পুতিনের বিরুদ্ধে কড়া ভাষণ দিলেন এরদোয়ান।
২০১৪ সালে রুশ বাহিনী কর্তৃক ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল দখলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। জানান, তুরস্ক ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বকে সবসময় কঠোরভাবে স্বীকৃতি দেয়। এ সময় ক্রিমিয়ার তুর্কিভাষী তাতার জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো রুশ নিপীড়নের কথাও উচ্চারণ করেন এরদোয়ান।
তিনি জানান, তাতার জনগোষ্ঠীকে জোরপূর্বক তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। দীর্ঘ ৮ দশকেও তাদের সে সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি। ১৯৪৪ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন বাহিনী ক্রিমিয়া থেকে তাতার মুসলিম জনগোষ্ঠীকে জোরপূর্বক তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে। তারপর রাশিয়া কর্তৃক ক্রিমিয়া দখলের পরও তাদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হয়।
এরদোয়ান বলেন, ক্রিমিয়ান তাতার তুর্কি দেশপ্রেমিকদের বেদনা ৮০ বছরেও কমেনি। এখনো তাদের মন থেকে নিজ ভূমি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের ক্ষত বন্ধ করা যায়নি। রাশিয়া কর্তৃক ক্রিমিয়া অধিগ্রহণকে তুরস্ক শুরু থেকেই স্বীকৃতি দেয়নি। এ ঘটনা দুর্ভোগকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। ইউক্রেনের ভৌগোলিক অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও মুক্তির ব্যাপারে তুরস্কের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া আবশ্যক। একই সঙ্গে ক্রিমিয়ান তাতার তুর্কি জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও ভালো থাকা নিশ্চিত করা তুরস্কের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম প্রাধান্য।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি ক্রিমিয়ান তাতার তুর্কিদের অধিকার সুসংহত করার জন্য ভবিষ্যতে আরও পদক্ষেপ নেওয়া থাকবে। ক্রিমিয়ান তাতার জনগোষ্ঠীর নিজভূমিতে নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। এটা আমাদের আন্তরিক আশা যে, ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতার ভিত্তিতে একটি ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তির মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটবে। এআরএস