নিজস্ব প্রতিবেদক: নোয়াখালীর হাতিয়ায় ট্রলারডুবির ঘটনায় ২৭ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে এখনও ঘাটে ফেরেনি ৬টি ট্রলার। এসব ট্রলারের সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল পর্যন্ত ১১টি ট্রলারডুবির ঘটনায় বিভিন্ন ট্রলারের সহযোগিতায় জীবিত উদ্বার হয়েছে প্রায় শতাধিক জেলে। উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, ঘাটের আড়ৎদার ও ট্রলার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
হাতিয়া আমতলী ঘাটের মাছের আড়তের মালিক দুলাল উদ্দিন জানান, নিখোঁজ ২৭ জেলের মধ্যে আমতলি ঘাটের কামরু মাঝির ট্রলারের ১৫ জন। এই ট্রলারের ১৭ জনের মধ্যে ২ জনকে কক্সবাজারের একটি ট্রলার উদ্ধার করে। পরে কক্সবাজার থেকে উদ্ধার হওয়া জেলেরা মোবাইলে বিষয়টি নিশ্চিত করে। একই ঘাটের রহিম মাঝির ট্রলারের ১২ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। এই ট্রলারের ১৪ মাঝি-মাল্লার মধ্যে ২ জনকে নিঝুমদ্বীপের একটি ট্রলার উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসে।
তিনি আরও জানান, একই ঘাটের মেরাজ মাঝির ট্রলারটি ডুবে গেলে ১৭ মাঝি-মাল্লা সবাইকে স্থানীয় অন্য একটি ট্রলার উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসে। এই তিনটি ট্রলার তার আড়তে মাছ বিক্রি করে।
এদিকে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ঘাটে ফেরেনি আরও ৬টি ট্রলার। এ তথ্য নিশ্চিত করে জাহাজমারা ট্রলার মালিক লুৎফুল্লাহিল নিশান জানান, নিঝুমদ্বীপের ৪টি ও জাহাজমারা কাটাখালী ঘাটের দুটি ট্রলার এখনও ঘাটে ফিরে আসেনি। এসব ট্রলারের সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। এমনকি ঘাটে ফিরে আসা অন্যান্য ট্রলারের মাঝি-মাল্লারাও এসব ট্রলার সাগরে দেখে আসেনি। এতে এসব ট্রলারের বর্তমান কী অবস্থা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে মালিকরা। এই ৬টি ট্রলারে ১১০ জনের মতো মাঝি-মাল্লা রয়েছে।
ট্রলারডুবির ঘটনায় তথ্য সংগ্রহ করছে উপজেলা মৎস্য অফিস। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান বলেন, গত দুই দিনে হাতিয়ার বিভিন্ন ঘাটে ও নদীর তীরে ছোট-বড় ২৯টি ট্রলার ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ ট্রলারের মাঝি-মাল্লারা সাতরিয়ে ও অন্য ট্রলারের সহযোগিতায় তীরে উঠে আসে। তবে এসব ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ৩০ জনের মতো জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে অনেকে পাশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার ট্রলারে উদ্ধার হতে পারে। তাই নিখোঁজের সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করা কঠিন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মিল্টন চাকমা বলেন, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কোস্টগার্ডকে বলা হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় উদ্ধার অভিযান চালানো যাচ্ছে না। স্থানীয়ভাবে ট্রলার মালিকরাও ট্রলার নিয়ে চেষ্টা করছে। সাগরের অবস্থা স্বাভাবিক হলে পুরোপুরিভাবে উদ্ধার অভিযান চালানো হবে। এমএফ