নিজস্ব প্রতিবেদক: বগুড়ায় বিয়ের দাবিতে দুইদিন ধরে ভাতিজার বাড়িতে চাচি অনশনে বসেছেন। ঘটনাটি নন্দীগ্রাম উপজেলার ৫নং ভাটগ্রাম ইউনিয়নে বিয়ের দাবিতে দুই সন্তানের জননী অনশন করছেন। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, অনশনরত নারীকে মারধর করে নগদ ২০ হাজার টাকা, মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে ও প্রমাণ নষ্ট করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন অভিযুক্ত রানা ও তার পারিবার।
এদিকে রানা ও তার পিতামাতার মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই নারী। অবস্থা সংকট হলে সাংবাদিকদের সহায়তায় বিজরুল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি হয়েছে ভুক্তভোগী নারী। চিকিৎসক জানান, অনেক জায়গায় গুরুতর জখম রয়েছেন। রোগীকে ভর্তি করানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে উপজেলার কালিশ পুনাইল গ্রামের রফিকুল ইসলাম ওরফে রানার বাড়িতে অনশন করছেন ওই নারী। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই নারীকে দেখতে ভিড় জমান সাধারণ মানুষ।
রফিকুল ইসলাম রানা (৩২) উপজেলার কালিশ পুনাইল গ্রামের মো. মনসুর হোসেনের ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করেন।
জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম রানা তার চাচি দুই সন্তানের জননীর সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। চাচি ও ভাতিজার প্রেমের খবর জানাজানি হলে গত ৪ বছর আগে ওই নারী ও তার স্বামীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। বিচ্ছেদের ৪ বছর পর দুই সন্তানের জননী বিয়ের দাবিতে ভাতিজা রফিকুল ইসলামের বাড়িতে অনশন শুরু করেন। এ ঘটনায় ভাতিজা রফিকুল ইসলাম বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে নারী অভিযোগ করে জানান, গত ৪ বছর ধরে আমাদের প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে বগুড়া শহরে ও নন্দীগ্রামে বাসা ভাড়া নিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। আমার আগের সংসার নষ্ট করেছে বিভিন্ন টাল-বাহানায়। আমি প্রেমের সম্পর্কে প্রথমে না জড়ালে সংসার ভাঙার হুমকি দিত। একপর্যায়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে কিন্তু আগের সংসার আমার টেকেনি।
এমতাবস্থায় এখন যদি রানা বিয়ে না করে তাহলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। ঘটনা জানার পরে আমার পরিবার বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমার কোথাও জায়গা নেই যাওয়ার। তাই বিয়ে করে সংসার করবো রানার সঙ্গে। রানা আমার আপন ভাতিজা না তাহলে বিয়ে করতে সমস্যা কোথায়?
এ বিষয়ে রানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম অবস্থায় এই বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন। বিভিন্ন ছবির কথা জানালে এডিট বলেও দাবি করেন। একপর্যায়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বিষয়টা স্বীকার করে বলেন, তবে আমি বিয়ে করবো না। এর জন্য যদি আমার ফাঁসি হয় হবে।
৫নং ভাটগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। এক নারী বিয়ের দাবি নিয়ে অনশন করছেন। যদি তাদের মধ্যে সম্পর্ক থাকে বা প্রমাণ থাকে ছেলের বিয়ে করাই উচিত হবে।
নন্দীগ্রাম থানার এস আই নাজমুল হক বলেন, এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। তবে যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমএফ