মঙ্গলবার | ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৫ ফাল্গুন, ১৪৩১

সারাদেশে বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি: সিলেট, সুনামগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে থেকে বিকেল পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।

সিলেট: সিলেটে একদিনে বজ্রপাতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কানাইঘাটে দুইজন, জৈন্তাপুরে দুইজন এবং কোম্পানীগঞ্জে একজন ও গোয়াইনঘাটে একজন মারা যান।

কানাইঘাটে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- লক্ষীপ্রসাদ ইউনিয়নের কেউটিহাওর গ্রামের জমশেদ আলীর ছেলে কালা মিয়া (৩৫) এবং কানাইঘাট পৌরসভার উত্তর দলইরমাটি গ্রামের তুতা মিয়ার ছেলে নূর উদ্দিন (৫৮)।

কেউটিহাওর গ্রামের কালা মিয়া (৩৫) শনিবার দুপুর ২টার দিকে বাড়ির পাশে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে আক্রান্ত হন। আর বিকেল ৩টার দিকে উত্তর দলইরমাটি গ্রামের নূর উদ্দিন (৫৮) বাড়ির পাশে মাঠে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হন।

কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা নাসরীন বলেন, বজ্রপাতে পৃথক স্থানে দুই ব্যক্তি মারা গেছেন বলে জেনেছি। আমরা তাদের তথ্য যাচাই-বাছাই করে সহায়তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

এদিকে, দুপুরে জৈন্তাপুর ইউনিয়নের আগফৌদ গ্রামের নূরুল হকের ছেলে নাহিদ আহমদ (১৩) এবং একই ইউনিয়নের ভিত্রিখেল ববরবন্দ গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে আব্দুল মান্নান মনই (৪৫) বজ্রপাতে মারা যান।

জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, বজ্রপাতে মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রস্তুত করা হয়েছে।

ঘটনাটি দুঃখজনক উল্লেখ করে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

এছাড়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পুটামারা গ্রামে বজ্রপাতে নেজামুল হক (২১) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। দুপুর ২টায় উপজেলার ইছাকলস ইউনিয়নের পুটামারা (পশ্চিম পাড়া) গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি ওই গ্রামের আরফান আলীর ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নেজামুল হক আবহাওয়ার অবস্থা খারাপ দেখে বাড়ির পাশের হালছাবড়া হাওর থেকে হাঁস বাড়িতে নিয়ে আসার সময় বজ্রপাতের কবলে পড়ে ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ও ইউনিয়ন বিট অফিসার মনজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নেজামুলের মরদেহ এমএজি ওসমানী হাসপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

অন্যদিকে, গোয়াইনঘাটে বজ্রপাতে মারা যান রোকশানা বেগম (৪৭) নামের এক গৃহবধু। তিনি জাফলং ইউনিয়নের ভিত্রিখেল হাওর গ্রামের আব্দুল রাজ্জাকের স্ত্রী। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় বজ্রপাতে দ্বীন ইসলাম (৬৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের সিরাজপুর চরপারা গ্রামে নিজ বাড়ির সামনে চারা খেতে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য কালাম হোসেন জানান, বাড়ির সামনে চারা খেতে দ্বীন ইসলাম লাকড়ি শুকাতে দিয়েছিলেন। দুপুরে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন দেখে লাকড়িগুলো আনতে গেলে আকস্মিক বজ্রাঘাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, বজ্রপাতে নিহত কৃষককে আর্থিক সহায়তা করা হবে।

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়নের নাগরৌহা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, রফিকুল ইসলামের ছেলে রুহুল ও বেলাল হোসেনের ছেলে আশরাফ। তারা দু’জন ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, দিনমজুরের কাজ করে বাড়ি ফেরার পথে সন্ধ্যার দিকে বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালে রুহুল ও আশরাফ বজ্রপাতে মারা যান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে পরিবার দুটিকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে।

একে

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM