শুক্রবার | ৬ জুন, ২০২৫ | ২৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

প্রথম দুই চিরকুটে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি, তৃতীয় চিরকুটে প্রাণনাশের হুমকি

পায়রানিউজ ডেস্ক: ময়মনসিংহের নান্দাইলের এক ব্যবসায়ীকে এক লাখ টাকা চেয়ে তিন দিন ধরে বাড়িতে চিরকুট দিচ্ছে অজ্ঞাতরা। দুই দিন চিরকুট দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও রহস্য উদ্‌ঘাটন করা যায়নি।

এ অবস্থায় টাকা না পেয়ে আবার শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে আরেকটি চিরকুটে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে তারা। এতে নান্দাইল পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নাথপাড়া মহল্লার বাসিন্দা নান্দাইল পৌর বাজারের পেয়াজ-রশুন ব্যবসায়ী সুনিল চন্দ্র বর্মণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

গত মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) প্রথম চিরকুট মেরে সুনিলের বাড়িতে। বাড়ির উঠানে কে বা কারা চিরকুটটি রেখে যায়। ওই চিরকুটে সুনিলের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে দুষ্কৃতিকারীরা। বিষয়টি কাউকে না জানাতে বলা হয়।

তবে তাদের বেধে দেওয়া সময়ে টাকা না দেওয়ায় দ্বিতীয়বার চিঠি পাঠায় অজ্ঞাতরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার বাড়ির উঠানে ফের মেলে চিরকুট। প্রথমবার ৫০ হাজার না দেওয়ায় এবার এক লাখ টাকা চাওয়া হয় সুনিলের কাছে।

দ্বিতীয় চিরকুটে লেখা ছিল, ‘সুনিল দা, আপনার কাছে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিলাম, কথা মতো আপনি দেন নাই।

চিরকুট পাওয়ার পর তা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোককে দেখিয়েছেন। এ জন্য আরো ৫০ হাজার টাকা বাড়ছে। এখন আপনাকে এক লাখ টাকা দিতে হবে। এটা আপনার জন্য ফাইন। আপনি কোথায় কোথায় কার কাছে যান, তা আমি নদীর ওপার থেকে দেখি।

আপনার জীবনের নিরাপত্তা কেউ দিতে পারবে না। পূর্বের কথা কি আপনার মনে আছে? নদীর পাড়ে আটকানো হয়েছিল। যদি মনে থাকে তাহলে টাকাগুলো নদীর পাড় চিতাশালে রেখে আসো। সেখানে একটি লাল নিশান পুইত্যা রাইখো, কাউকে বললে….’ এভাবেই হাতে লেখা চিরকুট তার বাড়ির উঠানে মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার রেখে যায় অজ্ঞাতরা।
এ নিয়ে থানায় জিডি করার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করার পর আজ শুক্রবার (০৪ অক্টোবর) আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায় তার বাড়িতে। তাতে লেখা, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করছেন, চিঠি অনেককে দেখিয়েছেন, এখন প্রাণ যাবে। কেউ ঠেকাতে পারবে না।’ এ ঘটনার পর আতঙ্কে দিন পার করছেন ওই ব্যবসায়ী।

সুনিল ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, মঙ্গলবার সকালে তার বাড়ির সামনে ফটকের কাছে একটি চিরকুট দেখতে পান পরিবারের লোকজন। তাতে লেখা ছিল, বুধবার (পরদিন) ৫০ হাজার টাকা একটি লাল কাপড়ে বেঁধে পাশের একটি টয়লেটের ট্যাংকির ওপরে রেখে দিতে। অন্যথায় জীবন নাশের হুমকি ছিল। এ ঘটনায় সুনিল ভীত হয়ে স্থানীয় কাউন্সিলের সঙ্গে পরামর্শ করে ৫০ হাজার টাকার কথা চেপে গিয়ে প্রাণ নাশের হুমকির কথা বলে একটি সাধারণ ডায়রি করেন।

তারা আরো জানায়, দুষ্কৃতিকারীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা না পেয়ে ফের বৃহস্পতিবার আরেকটি চিরকুট রেখে আসে উঠানে। তাতে লেখা ছিল, সময় মতো টাকা না দেওয়ায় ৫০ হাজার টাকা ফাইন হয়েছে। দ্রুত টাকা না দিলে মেরে ফেলবে। ঘটনাটি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথভাবে মাঠে নেমে কাজ করা অবস্থায় শুক্রবার সকালে ফের একটি পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় আরেকটি চিরকুট বাড়ির আঙ্গিনায় পাওয়া যায়। তাতে লেখা ছিল, আগের ঘটনা জানানোর কারণে এখন হত্যা করবে।

সুনিল জানান, প্রথম ঘটনাটি তিনি বেশী আমলে না নিলেও পরের ঘটনায় তিনি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে যান। পরে বিষয়টি নিয়ে তিনি বাজারের লোকজন ছাড়াও এলাকার লোকজনকে জানান। তারা বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুন কৃষ্ণ পাল ও নান্দাইল থানার ওসি মো. ফরিদ আহম্মেদ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে যান। এর মধ্যেই খবর আসে আরেকটি চিরকুটের। এ অবস্থায় পুরো পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহম্মেদ বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছিল। এর মধ্যে ফের চিরকুট পাওয়ায় বিষয়টি ব্যাপক রহস্যজনক মনে হচ্ছে। তবে তদন্ত করতে বেশ কয়েকটি টিম কাজ করছে। অচিরেই রহস্য উদ্‌ঘাটন করা যাবে।

সূত্র: কালের কণ্ঠ

এমএফ

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM