শনিবার | ৭ জুন, ২০২৫ | ২৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

যুবলীগ নেতাকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করলেন বিএনপি নেতারা

বরগুনার তালতলী উপজেলায় যুবলীগ কর্মীকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বিদ্যুতের খুঁটিতে বাঁধা সুমনের ছবি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। রোববার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তালতলী বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
ওই যুবলীগ কর্মীর নাম জাফরুল হাসান সুমন (৩০)। তিনি তালতলী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. মোসলেম উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে।
জানা গেছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর তালতলী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনের জের ধরে একটি মারধরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় দুলাল হাওলাদার বাদী হয়ে ৪৯ জনের নামে তালতলী থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে যুবলীগ কর্মী জাফরুল হাসান সুমনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
রোববার সন্ধ্যায় সুমন তার বাবা-মায়ের জন্য তালতলী বাজার থেকে ওষুধ কিনে গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিলেন। তালতলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল হকের বাসায় সামনে তার গাড়ি আসা মাত্রই শহীদুল হক, তার দুই ছেলে নাঈম ও অন্তুসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী তাকে গাড়ি থেকে নিচে নামায়। পরে তাকে সড়কের পাশে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। পরে তারা সুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, প্রায় ২০-২৫ মিনিট তার ওপর নির্যাতন চালায় তারা। ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। পরে তারা সুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
যুবলীগ কর্মী জাফরুল হাসান সুমন বলেন, বাবা-মায়ের জন্য ওষুধ কিনে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল হক, তার দুই ছেলে নাঈম ও অন্তুসহ ১০-১২ জন বিএনপি নেতাকর্মী আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ফেলে। পরে তারা আমার ওপর নির্যাতন চালায়। নির্যাতন শেষে তারা আমাকে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
যুবলীগ কর্মীর বাবা মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলেকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে শহীদুল হক, তার দুই ছেলে ও বিএনপির নেতাকর্মীরা মারধর করেছে। আমার ছেলেকে নির্যাতন করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আমি শাস্তি দাবি করছি।
জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল হক ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিএনপির দুই কর্মী ফোরকান হোসেন ইমরান ও জহিরুল হক ছোট্টকে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। ওই ঘটনার রেশ ধরে মামলার বাদীপক্ষের লোকজন সুমনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধরের কথা তিনি অস্বীকার করেন।
তালতলী থানার ওসি মো. কালাম খাঁন বলেন, মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে জাফরুল হাসান সুমনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। তবে তাকে খুঁটির সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়নি। সুমন একটি মামলার আসামি। সুমনকে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

আরএস 

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM