নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারির পর আনন্দ মিছিল নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা।
আনন্দ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘এই মুহূর্তে খবর এলো—ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হলো’, ‘ছাত্রলীগ গর্তে—শেখ হাসিনা ভারতে’- ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মিছিলে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্রলীগ একটি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠন। আজ তারা মুখে কালে কাপড় বেঁধে ভোর রাতে ক্যাম্পাসে মিছিল করেছে। হঠাৎ করে তাদের এই উত্থান আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য হুমকি। তাই আমরা দাবি জানিয়েছিলাম যেন, আজ রাতের মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়।
এর আগে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ অক্টোবর বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সংবিধান বাতিল এবং রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিও জানান।
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে গত ১৫ বছরে স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এ সম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ‘১৫ জুলাই ২০২৪ তারিখ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শতশত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে যে, ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।’
‘সেহেতু সরকার “সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯” এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন “বাংলাদেশ ছাত্রলীগ”-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ “বাংলাদেশ ছাত্রলীগ” নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করিল।’