মঙ্গলবার | ১৩ মে, ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ, ১৪৩২

মির্জাপুরে একই কলেজে দুই অধ্যক্ষ!

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নতুন কহেলা কলেজে দুই অধ্যক্ষ থাকায় কলেজে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। দুই অধ্যক্ষই নিজেকে বৈধ দাবী করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দিয়েছেন।

শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী আহসানের পক্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী অধ্যক্ষ ইমাম হোসেন মো. ফারুকের বিরুদ্ধে অনিয়মসহ অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে। দুই পক্ষের মধ্যে এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মো. নাসির উদ্দিন বাবুল ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী আহসান অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ ইমাম হোসেন মো. ফারুক জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ নিয়ে সরকারি বেতন ভাতাদি উত্তোলন করছেন ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে। কোন অনুমতি ছাড়াই কলেজের ভবন বিক্রি, কলেজের শতাধিক গাছ বিক্রিসহ ১৫-২০ রাখ টাকা আত্নসাতসহ নিয়োগ বাণিজ্য করে আরও ৪০-৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অনিয়ম তুলে ধরে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষকবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়, ইমাম হোসেন মো. ফারুক এক সময় এই কলেজের বিজনেস ম্যানেজমেন্ট শাখার অধ্যক্ষ হিসেবে চাকরী করতেন। তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আসায় তিনি নিজেই পদত্যাগ করে রাজধানী ঢাকার উত্তরায় ক্রিডেন্স কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। তখন থেকেই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী আহসান দায়িত্ব পালন করে আসছে। সেখানে তিনি কিছু দিন চাকুরী করার পর দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত হন। এরপর ২০১৬ সালে আওয়ামীলীগের নাম ব্যবহার করে টাঙ্গাইল জেলা পরিষদরে সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুর রহমান খান ফারুককে ম্যানেজ করে ভুয়া তথ্য পরিবেশন করে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী আহসানকে চাপ প্রয়োগ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে নতুন কহেলা কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান দেখান। যার কোন বৈধতা নেই। ইমাম হোসেন মো. ফারুক পুনরায় ভুয়া তথ্য পরিবেশন করে জালিয়াতির মাধ্যমে নতুন কহেলা কলেজে আসায় এলাকাবাসী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়। তাকে অপসারণসহ কলেজে না আসার জন্য মানববন্ধন প্রতিবাদ সমাবেশ করে যাচ্ছে।

এর আগে এই উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান চেয়ে কলেজে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ ইমাম হোসেন মো. ফারুক বলেন, সরকারি নিয়ম মেনেই আমি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। মোহাম্মদ আলী আহসান যিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দাবী করছেন তার কোন বৈধতা নেই। এলাকার একটি চক্র কলেজকে অস্থিতিশীল করতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগসহ আন্দোলন করে যাচ্ছে তার কোন ভিত্তি নেই। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ নুরুল আলম ও উপজেলারা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, নতুন কহেলা কলেজের অধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজেদের বৈধ দাবী করে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমএফ

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM