মঙ্গলবার | ৩ জুন, ২০২৫ | ২০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

প্রেস উইংয়ের সংবাদ ব্রিফিং: কিছু আইনি প্রক্রিয়া শেষে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: কিছু আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হবে। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে আমাদের সরকারের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমরা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের সম্মুখীন করতে চাই। তাঁর আমলে যে গণহত্যা হলো, জুলাই-আগস্টে দেড় হাজারের বেশি মানুষকে হত্যার মূল নির্দেশদাতা তিনি। এর আগে যেসব গুম হয়েছে, তখন তিনি সরকারপ্রধান ছিলেন। তারপর শ্বেতপত্রে এসেছে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে। এটি করদাতাদের টাকা, নাগরিকদের টাকা চুরি করে বাইরে চলে গেছে। এই পুরো জিনিসগুলোর জবাবদিহির জন্য আইনের আওতায় আনাটা হচ্ছে আমাদের একটি অঙ্গীকার।’

শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘যেহেতু ভারতের সঙ্গে আমাদের একটা প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে, প্রত্যর্পণ চুক্তিতে আবার কিছু আইনি প্রক্রিয়া করে তারপর একজনকে প্রত্যর্পণ চাইতে পারেন। আমরা সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছি। সেটি সম্পন্ন করার পর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে (শেখ হাসিনা) প্রত্যর্পণ করার জন্য ভারতকে অ্যাপ্রোচ করব।’

এ বিষয়ে গত সেপ্টেম্বরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছিলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে। এই চুক্তি অনুযায়ী ভারতে যদি কোনো দণ্ডিত বাংলাদেশি থাকেন, তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বা যে কেউ হোন না কেন, তাঁর প্রত্যর্পণ চাইতে পারে বাংলাদেশ। ছাত্র-জনতার বিপ্লবকালে যে গণহত্যা হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে, তার বিচারের লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপ ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে, দৃশ্যমান কিছু অগ্রগতিও হয়েছে। অচিরেই বিচার শুরু হবে। বিচার শুরু হওয়ার পর অবশ্যই প্রত্যর্পণ চাওয়া হবে।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি আজ ঢাকায় আসছেন। তাঁর এ সফর নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তো আশা করছি যে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটি আরও ভালো হবে। আগেও বলেছি, ভারতের সঙ্গে ভাষাগত, ঐতিহাসিক ও সংস্কৃতিগত সংযোগ আছে। তো আমরা অবশ্যই চাইব, ভারতের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, সেটি আরও ভালো জায়গা যাক, যাতে দুই দেশের মানুষ এর উপকার পায়। একই সঙ্গে আমরা চাচ্ছি, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা ন্যায্যতা, সমতা ও মর্যাদাপূর্ণ হয়।’

গতকাল শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের এই সরকার খুবই স্বল্পকালীন। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আগামী বছরেই আমরা একটি রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত সরকার দেখব। জানি না কী হবে।’

সংবাদ ব্রিফিংয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের এ বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, ‘এটি পুরোটাই ওনার ব্যক্তিগত মতামত। প্রধান উপদেষ্টাই বলবেন নির্বাচন কবে হবে।’

এদিকে আজ ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মেটার মানবাধিকার নীতিমালাবিষয়ক পরিচালক মিরান্ডা সিসন্স প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান ‘মেটা’কে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কিছু দেশ থেকে পরিচালিত বিভ্রান্তিমূলক বা মিথ্যা প্রচারণা প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। বিষয়টিও সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM