আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ফ্ল্যাট নিয়ে তদন্তের দাবি জোরালো হচ্ছে। এর মধ্যেই আবার জানা গেল, তার ভাইবোন এমন একটি রাজনৈতিক থিংকট্যাংকের সঙ্গে যুক্ত, যেটির বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা (অপপ্রচার) ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।
টিউলিপ যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের (ট্রেজারি) অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি)। মন্ত্রী হিসেবে তিনি দেশটির আর্থিক খাতের অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। শেখ হাসিনা গত আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হন।
টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিকের ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং বোন আজমিনা সিদ্দিক যে থিংকট্যাংকের সঙ্গে যুক্ত, সেটি বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ফেসবুক ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানোর জন্য অভিযুক্ত।
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক সেন্ট্রাল লন্ডনের কিংস ক্রসে একটি সাত লাখ পাউন্ড মূল্যের ফ্ল্যাটের মালিক। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক সহযোগীর কাছ থেকে তিনি এ ফ্ল্যাট উপহার পেয়েছেন।
টিউলিপ তার বোন আজমিনার মালিকানাধীন সাড়ে ছয় লাখ পাউন্ড দামের আরেকটি ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন। ওই ফ্ল্যাটও তাদের খালার এক উপদেষ্টার কাছ থেকে পাওয়া।
ফ্ল্যাট বিতর্কে টিউলিপের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা দাবি করছেন, টিউলিপ যদি তার কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা না দেন, তবে তাকে পদত্যাগ করতে হবে।
হ্যারো ইস্টের টরি এমপি বব ব্ল্যাকম্যান বলেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তার সম্পত্তি লেনদেনের বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে এবং মূলত কী বলা হয়েছিল এবং কেন, তা ব্যাখ্যা করতে হবে। যদি তিনি তা না করেন, তবে মন্ত্রী হিসেবে তার আর টিকে থাকা সম্ভব নয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছায়ামন্ত্রী ম্যাট ভাইকার্স বলেন, সরকারের যেকোনো সদস্যের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ অগ্রহণযোগ্য। তবে এটি আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয় যখন তিনি স্টারমারের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী।
হান্টিংডনের টরি এমপি নেন ওবেজ-জেকটি বলেন, টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে এই নতুন তথ্য উদ্বেগজনক। এখন এটি প্রমাণিত হয়েছে যে ফ্ল্যাটটি তিনি নিজে কেনেননি, বরং তাকে উপহার দেওয়া হয়েছে, তার আরও প্রশ্নের জবাব দেওয়া প্রয়োজন।
এদিকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশে টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। অভিযোগ, তিনি ও তার পরিবারের আরও চার সদস্য বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউরো আত্মসাৎ করেছেন।