শনিবার | ৭ জুন, ২০২৫ | ২৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

কেমোথেরাপি ছাড়াই অস্ট্রেলিয়ান সুপারমডেলের ক্যান্সার জয়

বিনোদন ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ান সুপারমডেল এলি ম্যাকফারসন সম্প্রতি প্রকাশিত তার স্মৃতিকথায় একটি হৃদয়বিদারক সত্য উন্মোচন করেছেন। সাত বছর আগে, ৫৩ বছর বয়সে তিনি গোপনীয় স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ৬০ বছর বয়সি ম্যাকফারসন তার বইয়ে উল্লেখ করেছেন যে, তার শরীরে এইচিআর-২ পজিটিভ এস্ট্রোজেন রিসেপ্টর ইনট্রাডাক্টাল কার্সিনোমা ধরা পড়ে, যা একটি আক্রমণাত্মক ক্যান্সারের ধরন। এনডিটিভি

প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে তার চিকিৎসক একটি লাম্পেকটমি করেন এবং পরবর্তীতে ম্যাস্টেকটমি, রেডিয়েশন, কেমোথেরাপি, হরমোন থেরাপি এবং স্তন পুনর্গঠনের সুপারিশ করেন। তবে ম্যাকফারসন প্রচলিত চিকিৎসার পথ বেছে না নিয়ে, একটি ‘সার্বজনীন পদ্ধতি’ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।

উইমেন্স উইকলি ম্যাগাজিনকে অস্ট্রেলিয়ান এ সুপারমডেল বলেন, এটি তার জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল, যা অপ্রত্যাশিত এবং বিভ্রান্তিকর। কিন্তু এটি আমাকে একটি গভীর আত্ম অনুসন্ধানের সুযোগ দিয়েছিল, যাতে আমি এমন একটি সমাধান খুঁজে পাই যা আমার জন্য কার্যকর।

ম্যাকফারসন তার আসন্ন বই ‘এলি’-তে লিখেছেন, প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থাগুলোকে না বলা আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু আমার নিজের ভেতরের অনুভূতিকে না বলা আরও কঠিন ছিলো। কখনও কখনও হৃদয়ের সত্যিকারের সিদ্ধান্ত অন্যদের কাছে অর্থহীন হতে পারে… কিন্তু তেমনটা ভাবার প্রয়োজন নেই।

এলি স্বীকার করেছেন যে, তার সেই সিদ্ধান্ত তার পরিবারের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল। কেমোথেরাপি প্রত্যাখ্যান করা নিয়ে তার ২৬ বছর বয়সি বড় ছেলে ফ্লিন অস্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন। কারণ তার মতে এটি ছিল মৃত্যুর মতো। ২১ বছর বয়সি ছোট ছেলে সাইও তার মায়ের সিদ্ধান্তের সঙ্গে পুরোপুরি একমত ছিলেন না। তবে তিনি সব সময় মায়ের পাশে ছিলেন এবং তার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছিলেন।

ম্যাকফারসন তার চিকিৎসার জন্য অ্যারিজোনার ফিনিক্সে চলে যান। যেখানে তিনি একটি বাড়ি ভাড়া করেন এবং প্রায় ৮ মাস ধরে সম্পূর্ণভাবে নিজের সুস্থতার দিকে মনোনিবেশ করেন। এ সময়ে তিনি তার প্রধান চিকিৎসক, ন্যাচরোপ্যাথ, হোলিস্টিক ডেন্টিস্ট, অস্টিওপ্যাথ, চিরোপ্র্যাক্টর এবং দুজন থেরাপিস্টের অধীনে চিকিৎসা নেন।

অস্ট্রলিয়ান এই মডেল এখন রীতিমত হোলিস্টিক চিকিৎসার প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত পেয়েছেন এবং ওয়েলেকো নামে একটি চিকিৎসা কেন্দ্রের মালিক। তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি এখন ক্লিনিকাল রেমিশন-এ রয়েছেন।

ম্যাকফারসন লিখেছেন, প্রচলিত পরিভাষায়, তারা বলবে আমি ক্লিনিকাল রেমিশনে আছি। কিন্তু আমি বলব, আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। এটি কেবল রক্ত পরীক্ষার ফলাফলের ওপর নির্ভর করে না, এটি জীবনের প্রতিটি স্তরে কেন এবং কীভাবে বেঁচে আছেন তার ওপর। আমি সত্যিই সবদিক থেকে সুস্থ- শারীরিক, মানসিক, আত্মিক- সবদিক দিয়েই।

ম্যাকফারসনের এই সাহসী পদক্ষেপ এবং তার অনন্য চিকিৎসা পদ্ধতির গল্প এখন অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।

আইএফ

© 2024 payranews.com | About us | Privacy Policy | Terms & Condidtion
Developed by- SHUMANBD.COM