রবিবার | ১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদানির বাকি বিদ্যুৎও আসতে শুরু করেছে

ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা অফিস: ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটও অবশেষে সফলভাবে ‘কমার্শিয়াল অপারেশনে’ প্রবেশ করেছে। এর ফলে ওই ইউনিট থেকে বাংলাদেশে ৭৪৮ মেগাওয়াট নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে, যা বাংলাদেশের লোডশেডিং সংকট মোকাবিলায় বিরাট ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে গোড্ডায় ২×৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড লিমিটেডের প্রথম ইউনিট চালু হয় গত এপ্রিল মাসে। তখন থেকেই গোড্ডায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ইউনিট চালু না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ এই প্রকল্পের পুরো সুফল নিতে পারছিল না। এতদিনে ওই পাওয়ার প্ল্যান্টটির সেই অসম্পূর্ণতা দূর হলো।

তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট বাণিজ্যিক অপারেশনে যাওয়ার কথা আদানি গোষ্ঠী কোনও প্রেস বিবৃতি বা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করেনি। বরং এই তথ্য সামনে এসেছে এদিন ভারতের স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানির স্টক ফাইলিংয়ের মাধ্যমে।

ওই ফাইলিংয়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়: ‘ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায় আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড লিমিটেডের (‘এপিজেএল’, যেটি আদানি পাওয়ার লিমিটেডের পূর্ণ মালিকানাধীন একটি সাবসিডিয়ারি) যে ২×৮০০ মেগাওয়াট আলট্রা-সুপারক্রিটিকাল বিদ্যুৎ প্রকল্পটি রয়েছে, তার ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দ্বিতীয় ইউনিট বাংলাদেশ সময় ২৫ জুন রাতে কমার্শিয়াল অপারেশনস অর্জন করেছে।’

এর আগে চুক্তির শর্ত অনুসারে ওই ইউনিটটি রিলায়েবিলিটি রান টেস্টগুলোতেও সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে।

এর পরই মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জে আদানি পাওয়ারের শেয়ার দর একলাফে প্রায় ৩ শতাংশ বেড়ে যায়। বেলা দুইটার দিকে আদানি পাওয়ারের প্রতিটি শেয়ারের দাম পৌঁছায় প্রায় ২৫০ রুপিতে, দিনশেষে তা ২৫১ রুপি ছাড়িয়ে যায়।

আন্তর্জাতিক স্তরে জ্বালানি কয়লার বিপুল সংকটের মধ্যেও আদানি গোষ্ঠী যেভাবে প্রথম ইউনিট চালু করার দুই আড়াই মাসের মধ্যেই গোড্ডার দ্বিতীয় ইউনিটও চালু করতে পেরেছে, সম্ভবত সে কারণেই শেয়ার বাজারের বিনিয়োগকারীরা তাদের ওপর আস্থা রেখেছেন।

দিল্লিতে এনার্জি খাতের বিশেষজ্ঞ সৌমিক সেনগুপ্ত বাংলা ট্রিবিউনকে বলছিলেন, ‘গোড্ডাতে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো কয়লা কোথা থেকে আসবে, কী প্রযুক্তি ব্যবহার হবে সেসব নিয়ে তাদের ভাবতে হবে না। এগুলো আদানির মাথাব্যথা। যে কারণে সম্প্রতি পায়রা বা রামপালে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে, গোড্ডাতে সেটা কখনোই হবে না।’

এর কারণ আদানি গোষ্ঠীর বিশ্বব্যাপী বিপুল নেটওয়ার্ক– সুদূর অস্ট্রেলিয়া বা ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা এনেও তারা ভারতে তাদের পাওয়ার প্ল্যান্টের কাজ চালু রাখতে পারবে।

গোড্ডাতে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ বারবার বিলম্বিত হলেও গত বছরের সেপ্টেম্বরে এর চেয়ারম্যান গৌতম আদানি দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে কথা দিয়েছিলেন, বিজয় দিবসেই (১৬ ডিসেম্বর) ওই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসা শুরু হবে।

সেই ‘ডেডলাইন’ মিস হয়ে গেলেও তার চার মাসের মধ্যেই বাংলাদেশ গোড্ডার বিদ্যুৎ পেতে শুরু করে। আর তারও দুই মাসের মধ্যেই ওই কেন্দ্রের বাকি অর্ধেক বিদ্যুৎও এখন বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে।

© 2022 payranews.com
Developed by- Payra Team