সোমবার | ১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজিমপুর গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াছে হাতে আলাদিনের চেরাগ!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা অফিস: গণপূর্ত আজিমপুর ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইলিয়াছ আহমেদের হাতে কী আলাদিনের চেরাগ রয়েছে-এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে গণদুর্নীতিতে ডুবতে বসা গণপূর্ত অধিদপ্তরে। কী এমন যাদুর বলে তিনি বছরের পর পর ঢাকায় গুরুত্বপূর্ণ ডিভিশনগুলোকে কাজ করে যাচ্ছেন তা নিয়ে বিভ্রান্ত হচ্ছেন সবাই।
দুর্নীতিতে সিদ্ধহস্ত এই ইলিয়াস তার দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিভিশনগুলোতে অরিজিনাল কাজে ৫ শতাংশ, সংস্কার কাজে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ এবং সংস্কারের অনেক কাজ না করেই শুধুমাত্র বিল-ভাউচার করেই তুলে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। যা তার দায়িত্ব পালন করা ডিভিশনগুলোতে তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে।
বিএনপি আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ২১বিসিএস গণপূর্ত ক্যাডারের মেধায় শেষ দিকের এই কর্মকর্তা কিন্তু দুর্নীতিতে টেক্কা দিয়েছেন সবাইকে। তিনি উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হিসেবে সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ রমনা-১, নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঢাকা ডিভিশন-২, স্বাস্থ্যখাতের টাকা লুটপাটের স্বর্গরাজ্য মহাখালী এবং গত পাঁচ বছর কয়েক হাজার কোটি টাকা এপার্টমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়নকারী আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন এই মো. ইলিয়াছ আহমেদ।
বহু বিতর্কিত ঠিকাদার জিকে শামীম যেসব প্রকৌশলীদের দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার সিন্ডিকেট বাণিজ্য করেছেন তার মধ্যে এই ইলিয়াছ অন্যতম। হাজার কোটি টাকার দুুর্নীতির অভিযোগ ওঠা সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম টেন্ডার সিন্ডিকেটের এক নম্বর লোক ছিলেন এই ইলিয়াছ আর তাঁর ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন শিবির সংশ্লিষ্টতার কারনে ডিএস পুলে সুযোগ না পাওয়া একেএম সরওয়ার্দী।
মো. ইলিয়াছ আহমেদকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও গণভবনের দায়িত্বে প্রায় দু’বছর রেখেছিলেন সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম। দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিতি থাকায় এই সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনের ডিউটি পাসের ক্লিয়ারেন্স পাননি। কিন্তু নিজের লোক হিসেবে রফিকুল ইসলাম তাকে সরিয়ে দেননি। এ নিয়ে তৎকালীন সামরিক সচিব জয়নাল আবেদীন ক্ষুব্ধ ছিলেন। তিনি এতোটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনে রফিকুল ইসলামের গাড়ি প্রবেশ করতে দিতেন না। কোন মিটিং থাকলে তাকে গেটে নেমে হেটে যেতে হতো।
এরই মধ্যে আজিমপুরের পুরোনো সরকারি কোয়ার্টার ভেঙ্গে বহুতল ভবন নির্মাণের প্রকল্প পাস হওয়ায় রফিক তার আস্থাভাজন মো. ইলিয়াস আহমেদকে বদলি করেন। ২০১৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর তিনি আজিমপুর গণপুর্ত বিভাগে বদলি হয়ে আসলেও দীর্ঘ এই ছয় বছর তিনি একই পদে রয়েছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তিন বছর পর বদলির বিধান থাকলেও এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন ইলিয়াছ আহমেদ। এই সময়ে গণপূর্তে পাঁচজন প্রধান প্রকৌশলী, তিনজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বদল হলেও মো. ইলিয়াছ ঠিকই বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

আগামী পর্বে দেখুন: পরিত্যক্ত ভবনে সংস্কার! কোটি টাকা আত্মসাত ইলিয়াসের!

© 2022 payranews.com
Developed by- Payra Team